চ্যানেল হিন্দুস্থান , নিউজ ডেস্ক-
এজলাসে বসে নিজেই স্মার্টফোনে ‘QR Code’ স্ক্যান করে জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষার্থীর জালিয়াতি হাতেনাতে ধরলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। আর এটি করতে নিজের ও আইনজীবীর মোট দুটি ফোন ব্যবহার করে ‘QR Code’ স্ক্যান করেন, দেখান কীভাবে জালিয়াতি করা হয়েছিল, তাও বোঝেন বিচারপতি।
দেখা যায়, অভিযুক্ত জয়েন্টের ফল সংক্রান্ত নথি ডাউনলোড করে জাল করতে পেরেছেন ঠিকই, কিন্তু বোর্ডের কোড জাল করতে ব্যার্থ। তাই সেই ‘QR Code’ যখন বিচারপতি নিজের ফোনে স্ক্যান করেন, তখনও বেরিয়ে যায় আসল তথ্য এবং বিচারপতির টানা প্রশ্নের মুখে পড়ে, নিজের দোষ স্বীকারও করে নেন অভিযুক্ত।
যদিও অভিযুক্ত ছাত্রের বিরুদ্ধে কড়া কোনও পদক্ষেপের নির্দেশ দেননি বিচারপতি। তার পর্যবেক্ষণ, অভিযুক্ত এখনও ছাত্র। তাই তার ভবিষ্যতের কথা ভেবে বোর্ডকে তিনি কড়া পদক্ষেপ যাতে না করা হয়, তার পরামর্শ দিয়েছেন।
মামলার প্রেক্ষাপট চলতি বছরের জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। তার দাবি, ফলপ্রকাশের পর তিনি যখন প্রথম ওয়েবসাইটে নিজের র্যাঙ্ক দেখেন, তখন তার ‘GMR’ বা ‘General Merit Rank’ ছিল ১৬ এবং ‘PMR’ বা ‘Pharmacy Merit Rank’ ছিল ২৪১।
কিন্তু পরে তিনি আবার যখন নিজের র্যাঙ্ক দেখেন, তখন দেখা যায় তার ‘GMR’ বা ‘General Merit Rank’ হয়েছে ১৪৩৯ এবং ‘PMR’ বা ‘Pharmacy Merit Rank’ হয়েছে ৩২৮৫। এরপরই আদালতের দ্বারস্থ হন অভিযোগকারী। সেই মামলায় অভিযোগ শুনে বিচারপতি প্রশ্ন তোলেন, এত বড় অভিযোগ, র্যাঙ্ক বদলে যাবে, তাহলে সিবিআইকে কেন তদন্তভার দেওয়া হবে না? সেই সময়ই উত্তরপত্রে থাকা QR Code এর প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডের আইনজীবী।
দেখা যায়, দ্বিতীয়বার যে র্যাঙ্ক পরীক্ষার্থী দেখেছেন সেটাই ঠিক। এরপর পরীক্ষার্থীকেই পাল্টা প্রশ্ন শুরু করেন বিচারপতি। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রশ্নের মুখে ভেঙে পড়েন ওই পরীক্ষার্থী। তিনি স্বীকার করে নেন, তিনি র্যাঙ্ক সংক্রান্ত ডাউনলোডেড নথি জালিয়াতি করেছেন। এরপরই মামলা খারিজ করে দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। যেহেতু অভিযুক্ত এখনও ছাত্র, তাই তার বিরুদ্ধে কোনও কড়া পদক্ষেপ বা বিরূপ প্রতিক্রিয়া গ্রহণ না করতে জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডকে অনুরোধ করেছেন বিচারপতি।