দেবক বন্দ্যোপাধ্যায়
জয় গোস্বামীর কবিতায় বারংবার ফিরে এসেছে আগুন।
‘আমরা যেদিন আগুনের নদী থেকে, তুলে আনলাম মা’র ভেসে যাওয়া দেহ’ কিংবা ‘তার পোড়া ঘা আবার পোড়ে আমাদেরই দোষে।’
তালিকা দীর্ঘ করা যায়। প্রতিবাদের আগুন, প্রেমের আগুন, ভিতরে ভিতরে নিঃশেষ হবার আগুন আবার যৌনতার আগুনও। তাঁর কলম থেকে বেরিয়েছে, আগুন, তুমি কেমন করে হাজির করো, এমন সব পাগল মেয়েদের। আবার ধরুন, সেই কবিতা টা, রেশমী আজ আগুন নিয়ে এলে/রেশমী এসব কথা কাউকে বলবে না। এসব পঙ্কতির মধ্যে যদি মৃদু প্রেম, প্রেমের মৃদু তাপ থাকে, তাহলে, সবচেয়ে উঁচু তারাকে আমি বলি, এই কবিতায় পুড়েঝুড়ে আঙরা হয়ে যাওয়া গাছ আর তার না পোড়া শিকড়, তারপর তার ডালে কচি পাতা গজানো আর সংকোচে সেই পাখিটির জিজ্ঞাসা, গাছ ও গাছ…
এ সবের মধ্যে আবহমান প্রেম আছে, আছে বিশ্বচরাচর ঘিরে।
আবার ‘ভুতুমভগবান’ কবিতায়, “আগুনের চিন্তা করি, আগুনের সময় কখন? আগুনের সময় এখন, আগুনের সময় এখন।” আবার এই কবিতাতেই, আগুনের রথে চড়ে জয় গোস্বামী পাড়ি দিয়েছেন অনন্তে।
লিখেছেন,
“মাথা ঝাড়া দেয়, চুলে জ্বলন্ত বাতাস লাগে
চুল ঝাড়া দেয়, ঝড়ে উড়ে আসে গরম ছাই
আমি মৃত্যুর পরের অংশ লিখতে চাই।
জয় গোস্বামীর কবিতায় বিবিধ আগুনের ছড়াছড়ি। তাঁর বিখ্যাত ‘মালতীবালা বালিকা বিদ্যালয়’ কবিতাতেও, তবু আগুন বেণীমাধব, আগুন জ্বলে কই…
এ হেন কবিকে ছুঁয়েছে বগটুই -এর আগুন। কবি লিখেছেন একগুচ্ছ কবিতা। প্রকাশ পেয়েছে একটি পুস্তিকা, নাম ‘দগ্ধ।’