নীল বণিক :
বসিরহাটের বাদুড়িয়ার ঘটনাতেই জেলা পুলিশের ডিআইবিকেই দায়ি করছেন রাজ্য পুলিশের বড় কর্তারা। তাঁদের প্রশ্ন বাদুড়িয়ার এই ঘটনার কোনও অগ্রিম আঁচ করতে পারেনি জেলার ডিআইবি অর্থাৎ ডিস্ট্রিক্ট ইনটেলিজেন্স ব্রাঞ্চ-এর কর্তারা। দু’দিন ধরে ঝামেলা চললেও সে ভাবে কোনও তথ্য তাঁদের হাতে ছিল না। বাদুড়িয়া থানা, বসিরহাট থানা অশান্তি থামাতে মাঠে নেমেছিল কিন্তু পর্যাপ্ত পুলিশ কর্মী না থাকায় পরিস্থিতি আয়ত্ত্বের বাইরে চলে যায়। তাই পুলিশ কর্মীদের সামনেই দুষ্কৃতীরা লুঠপাট চালায়। সেই দৃশ্য কার্যত নীরব দর্শকের মতো দেখতে হয় পূলিশকে।
স্থানীয় দুষ্কৃতীদের হাতে এত অস্ত্র যে মজুত আছে তাও অনুমান করতে পারেননি জেলার গোয়েন্দারা। দু’দিন ধরে টানা লুঠপাট চললেও তার পিছনে স্থানীয় কাদের ইন্ধন ছিল তাও জানতে পুরোপুরি ব্যর্থ জেলার গোয়েন্দারা। জেলা পুলিশের একাংশ মনে করছেন ডিআইবি সঠিক তথ্য দিলে এতদুর জল গড়াত না। এমনিতেই সীমান্তবর্তী জেলা। বাংলাদেশ থেকে অবৈধ ভাবে দুষ্কৃতীরা সব সময় বসিরহাটে আশ্রয় নিয়ে থাকে। গোষ্ঠী সংঘর্ষের পিছনে তাদের হাত আছে বলে জেলার পুলিশ কর্তারা জানতে পেরেছে। তবে বাংলাদেশ থেকে অবৈধ ভাবে আসা সেই সব দুষ্কৃতীদের সম্পর্কে এখনও রিপোর্ট দিতে পারেনি জেলার গোয়েন্দারা। গোষ্ঠী সংঘর্ষের মতো ঘটনা মোকাবিলা করতে হলে সবার আগে দরকার সঠিক তথ্য। যা যোগাতে পারেনি বলেই মত জেলার পুলিশ কর্তাদের। পাশাপাশি বসিরহাটের বাদুড়িয়ার ঘটনায় রাজ্য আইবির ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
বসিরহাটের সীমান্তে ডিউটি করা এক আইবি আধিকারিকের বক্তব্য, সীমান্তে কাজ করবার মতো কোনও পরিকাঠামো নেই আইবির গোয়েন্দাদের হাতে। সারা মাসে সোর্স মানি হিসেবে মাত্র ৩০০ টাকা পান তাঁরা। আর সামান্য কিছু মোবাইল ফোনের খরচ পান মাত্র। তাতে সীমান্তের দুষ্কৃতীদের সব খবর রাখা সম্ভব হয় না বলেই জানিয়েছেন আইবির ওই কর্মী। জেলা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের ব্যর্থতা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে উত্তর ২৪ পরগণার পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, “যা বলার ওপর মহল বলবেন। আমি বাদুড়িয়ার ঘটনা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি নই।” প্রশ্ন একটাই জেলার পুলিশ সুপার আপনি, আর গত দু’দিন ধরে জেলা পুলিশের ব্যর্থতা নিয়ে মন্তব্য করবেন ওপর মহল? কেন? জেলা পুলিশে আপনিই তো শেষ কথা। আপনার ওপরে ওপর মহল কে? স্বভাবতই ফোনে এমন প্রশ্ন শুনে চুপ ভাস্কর বাবু।
অন্যদিকে পুলিশের অন্য অংশের অভিযোগ, উত্তর ২৪ পরগণা জেলা আইজি দক্ষিণবঙ্গের অধীনে। তাঁর অধীনে রয়েছেন ডিআইজি প্রেসিডেন্সি রেঞ্জ। তাঁরা কচিৎ কদাচিৎ নিজেদের এলাকা পরিদর্শনে আসেন। ভবানী ভবনের ঠাণ্ডা ঘরে বসেই শুধুমাত্র নির্দেশ পাঠানোই তাঁদের অভ্যাস। ফলে ওপর মহলের চাপও নেই। তাই পুলিশের ইনটেলিজেন্সও ব্যর্থ।
লাইক শেয়ার ও মন্তব্য করুন
বিভিন্ন বিষয়ে ভিডিয়ো পেতে চ্যানেল হিন্দুস্তানের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন