চ্যানেল হিন্দুস্তান ব্যুরো।
বিজেপির তর্পণ অনুষ্ঠানের মঞ্চ ভেঙে দিল কলকাতা পুলিশ। বুধবার সকালে এমনটাই অভিযোগ করেছে রাজ্য বিজেপির (BJP) বরিষ্ঠ নেতারা। বিজেপির পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, মহালয়ার (Mahalaya) চতুর্দশী তিথিতে কলকাতার বাগবাজার ঘাটে প্রয়াত কর্মীদের আত্মার শান্তি কামনায় তর্পণ অনুষ্ঠান করা হবে। এদিন সকালে তর্পনের কথা মাথায় রেখে দিন কয়েক আগে থেকে শুরু হয়েছিল মঞ্চ বাঁধার কাজ। বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, পুলিশের থেকে যাবতীয় অনুমতি নিয়েই তারা এই মঞ্চ বাধার কাজ করেছিল। মঙ্গলবার রাতেই নাকি তাদের মঞ্চ ভেঙে দিয়েছে কলকাতা পুলিশ।
সকালের খবর পাওয়া মাত্রই বাগবাজার ঘাটে আসেন বিজেপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক তথা পশ্চিমবঙ্গের পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়, সহ পর্যবেক্ষক অরবিন্দ মেনন, বিজেপি নেতা মুকুল রায় ও বিজেপি নেতা রাহুল সিংহ। সকলে এসে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন। প্রত্যেকেই রাজ্য সরকার ও কলকাতা পুলিশের তর্পনের মঞ্চ ভাঙচুরের ঘটনার বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পুলিশের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় এরপর রাস্তায় বসে পড়েন বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়। পুলিশের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন বিজেপি নেতা কর্মীরা। পরে জানা যায়, যে সমস্ত বিজেপির নিহত কর্মীদের পরিবার-পরিজনরা তর্পণ করতে এসেছিলেন তাদের অন্য ঘাটে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এখানে বিজেপি নেতৃত্বের উপস্থিতিতেই তারা তর্পণ করেছেন।
বিজেপি নেতা মুকুল রায় (Mukul Roy) বলেছেন, “হিন্দু ধর্মে প্রয়াত প্রিয়জনদের আত্মার শান্তি কামনায় প্রতিবছর মহালয়ার দিন দর্পন হয়। কখনো শুনিনি তর্পনের জন্য কারো থেকে অনুমতি নিতে হয়। বলা হচ্ছে তর্পনের জন্য অনুমতি নিতে হবে। অনুমতি নিতে হবে ? স্পষ্ট কোনো ব্যাখ্যা রাজ্য সরকার বা পুলিশের কাছে নেই।” প্রাক্তন রেলমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, আগামী পাঁচ মাসের মধ্যেই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন হবে। এই সমস্ত বিষয় রাজ্যের মানুষ দেখছেন। তারাই বিচার করবেন পাঁচ মাস পর কারা ক্ষমতায় থাকবে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস এই সমস্ত বিষয়গুলি দেখে মানুষ ভারতীয় জনতা পার্টিকে বিপুল ভোটে জয়ী করবেন।
এ প্রসঙ্গে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বিজেপি নেতা রাহুল সিংহ বলেন, “হিন্দু সংস্কৃতির সঙ্গে যুক্ত তর্পণ অনুষ্ঠানের মঞ্চ এই রাজ্য সরকার ভেঙে দিয়েছে। এই সরকারকে যতদিন না গঙ্গার জলে বিসর্জন দেওয়া যায় ততদিন আমাদের আন্দোলন চলবে। রাজ্য সরকারের প্ররোচনা আছে বলেই এই ধরনের কাজ করেছে কলকাতা পুলিশ। সরকারি ইন্ধন না থাকলে পুলিশের এত বড় সাহস হয় না। তর্পণ করতে না দেওয়া হিন্দু সংস্কৃতির ওপর হস্তক্ষেপ বলেই আমরা মনে করি।” তিনি আরও বলেন, “এই ঘটনার আমরা তীব্র নিন্দা করছি। আমরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছি যাতে তর্পণ কর্মসূচি কিভাবে করা যায়।” প্রসঙ্গত, এবছরও মহালয়ার দিন তর্পণ কর্মসূচির আয়োজন করেছিল বিজেপি। এই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে কলকাতায় এসেছিলেন বিজেপির বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি জগৎ প্রকাশ নাড্ডা।