নামেই ছোটু, করে দেখালেন বড় কাজ।
ঘটনার পটভূমি আমেরিকার কোনও শহর নয়, যেখানে নগ্ন হয়ে প্রতিবাদের উদাহরণ অনেক আছে।
বিষয়টা মহিলাদের নগ্ন মিছিলের মতো সেন্সেটিভও নয়।
একটি মধ্যবয়স্ক পুরুষ ঠিক কোন পরিস্থিতে পৌছলে, প্রতিবাদ জানানোর স্পর্ধা কোন উচ্চতায় গেলে এমন কাণ্ড করতে পারে, তা বুঝতে গেলে জঙ্গল মহলের ছোটু রাজওয়ারের কথা জানতে হবে।
দিন কয়েক আগেই স্থানীয় পঞ্চায়েত অফিসে গিয়েছিলেন ছোটু। অন্তত একটা ত্রিপলের জন্য কাকুতি-মিনতি। কিন্তু মেলেনি সেই ত্রিপল, যা দিয়ে তিনি তাঁর লড়ঝড়ে হয়ে যাওয়া খড়ের চালের উপর আচ্ছাদন দিতে পারেন। অন্তত বর্ষার হাত থেকে ঘরে জল ঢোকাটা বন্ধ করতে পারেন!
পঞ্চায়েতের না, স্বাভাবিকভাবেই আঘাত করে ছোটু-কে। ছোটুর অভিযোগ, দীর্ঘদিন আগে আবাস যোজনায় বাড়ি দেওয়া হবে বলে নাম নথিভুক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু এখন পর্যন্ত সে সবের কোনও পাত্তা নেই। স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান শনি চরণ সিং মূড়া-ও স্বীকার করেছেন যে ২০১১ সালে আবাস যোজনায় বাড়ি দেওয়ার জন্য তালিকা তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল। সেই তালিকা মেনেই ঘর দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তাতে ছোটুর নাম আছে কি না তা তাঁর জানা নেই।
তবে, ১০ বছর ধরে যে তালিকা রয়েছে তাতে কেন আজও এই প্রকল্পের আওতায় থাকারা ঘর পেয়ে উঠলেন না? এর কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি শনি চরণ সিং মূড়া। ঝালদা দু’নম্বর ব্লকের আওতাধীন বেগুন কোদর গ্রাম পঞ্চায়েত। ১১ সদস্যের এই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সিপিএম-এর।
এছাড়াও আরও ২ জন সদস্য রয়েছেন সিপিএম থেকে। উপপ্রধান রয়েছেন বিজেপি থেকে। এখানে বিজেপি-র সদস্য সংখ্যা ৪। কংগ্রেসের ২ জন এবং ফরওয়ার্ড ব্লক ও তৃণমূল কংগ্রেসর ১ জন করে সদস্য রয়েছেন এই গ্রাম পঞ্চায়েতে।
ছোটু-র বিষয়টি তাঁরা খোঁজ খবর নিচ্ছেন। তাঁর অভাব-অভিযোগ মেটানোর চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে পঞ্চায়েত। কিন্তু, কবে সমস্যার সমাধান হবে তা জানেন না ছোটু। আপাতত যে প্রতিবাদ তিনি করেছেন তার ফল লাভের আশায় ভাঙা ঘরের দিকে তাকিয়েই দিন কাটছে ছোটু রাজোয়াড় ও তাঁর পরিবারের।
ছোটুর বেগুন কোদর গ্রাম পৃথিবীতে বিখ্যাত ভূতের জন্য। একটি অশরীরি আত্মা নাকি দেখা যায় বেগুন কোদর স্টেশনে। তবে ছোটুর লড়াই আরও ভয়ানক ভূতের বিরুদ্ধে।
সেই লড়াই লড়তে শেষ পর্যন্ত নগ্ন হলো ছোটু।