চ্যানেল হিন্দুস্তান ব্যুরো।
প্রয়াত হলেন পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেসের (Congress) অন্যতম সহ সভাপতি পশ্চিম বঙ্গ অধ্যাপক -শিক্ষক সমিতির কর্ণধার নির্মলেন্দু ভট্টাচার্য। রবিবার ভোর ২.৪৫ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। কলকাতার সিআইটি রোডের বাড়িতে মারা যান তিনি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর। দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন তিনি। ৭০-এর দশকে প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সীর সঙ্গেই ছাত্র রাজনীতি দিয়ে রাজনীতিতে পদার্পণ করেন নির্মলেন্দু। ৭০-এর দশকে নকশাল ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে একাধিকবার তাঁর সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিল। সেই সময় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় নকশালপন্থী ছাত্রসংগঠন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইহাইয়া খানকে কেন্দ্র করে একটি কুরুচিকর পোস্টার জারি করেন। সেই পোস্টারের বিরোধিতা করায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় গুলিবিদ্ধ হন তিনি। তাঁকে সাতটি গুলি মারা হয়েছিল সেই সময়। ঘটনায় অভিযোগের আঙুল উঠেছিল নকশালপন্থী ছাত্র সংগঠনের বিরুদ্ধে।
ঘটনার কথা জানতে পেরে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী তথা কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভানেত্রী ইন্দিরা গাঁধী চিকিৎসার জন্য তাঁকে দিল্লি নিয়ে যান। সেখানেই দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর সুস্থ হয়ে কলকাতায় ফেরেন। মূলত ইন্দিরা গাঁধীর হস্তক্ষেপেই সে যাত্রায় প্রাণে বেঁচে যান নির্মলেন্দু। ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের ইছাপুরের বাসিন্দা হলেও, পরে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে তাঁর কর্মভূমি হয়ে ওঠে কলকাতা। বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কংগ্রেসের শিক্ষক সংগঠনের প্রধান হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছিলেন নির্মলেন্দু ভট্টাচার্য।
সতীর্থের প্রয়াণে শোকস্তব্ধ পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি সোমেন মিত্র (Somen Mitra) বলেছেন, “আমার ভ্রাতৃসম পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির অন্যতম সহ সভাপতি নির্মলেন্দু ভট্টাচার্যের আকস্মিক প্রয়াণে আমি শোকস্তব্ধ। ছাত্র রাজনীতির আঙিনাকে থেকে ধাপে ধাপে উঠে আসা নির্মলেন্দু ভট্টাচার্য কংগ্রেস সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ে নিজের নেতৃত্বকে স্বমহিমায় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।” তিনি আরও বলেন, “পরবর্তী সময়ে পশ্চিম বঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেসের অধ্যাপক ও শিক্ষক সমিতির অন্যতম কর্ণধার রূপে শিক্ষক আন্দোলনেও তাঁর ভূমিকা অনস্বীকার্য। নির্মলেন্দুর মৃত্যুতে দলের অপূরনীয় ক্ষতি হলো। আমি প্রয়াত নেতার শোকসন্তপ্ত পরিবারবর্গের প্রতি জানাই গভীর সমবেদনা। কামনা করি, প্রয়াত নির্মলেন্দুর আত্মা যেন পরম করুণাময়ের পাদপদ্মে চিরশান্তি লাভ করে।”
শোকবার্তায় কংগ্রেসের লোকসভার দলনেতা অধীর চৌধুরী (Adhir Chowdhury) বলেছেন, “শিক্ষক, নেতা, প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির সহ সভাপতি নির্মলেন্দু দা আর নেই, এটা ভাবতে খুব কষ্ট হচ্ছে। তাঁর বিদেহী আত্মা স্বর্গলাভ করুক। স্বজন হারানো পরিবারের সকলকে আমার সমবেদনা জানাই।”