কমলেন্দু সরকার :
ভাদনগর রেল স্টেশন। এই নামটি উঠে এল নরেন্দ্র দামোদর মোদী ভারতের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর। কিংবা বলা যেতে পারে মোদীর নির্বাচনী প্রচারের সময় থেকে। ছোটবেলায় বাবার সঙ্গে এই স্টেশনেই চা বিক্রি করতেন তিনি। ভারত সরকারের সংস্কৃতি দফতর এই ভাদনগর রেল স্টেশনকে ঐতিহাসিক পর্যটন কেন্দ্রের সঙ্গে জুড়তে চাইছে। ভাদনগর রেল স্টেশনকে নতুন চেহারা দেওয়া হচ্ছে। এর জন্য নাকি আট কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে ভারতীয় রেল।
নরেন্দ্র দামোদর মোদীর জন্মস্থান ভাদনগর শহরে। ডিজিটাল ভিলেজ স্কিমের আওতায় ভাদনগর শহর এবং ব্লকের সবক’টি গ্রামকেই ডিজিটালাইজড করার পরিকল্পনা নিয়েছে গুজরাত সরকার। ডিজিটাল পরিষেবা চালু করার কাজ শুরু হয়ে গেছে ইতিমধ্যেই।
আন্তর্জাতিক টুরিস্ট ম্যাপে রাখার কথাও ভাবা হচ্ছে ভাদনগরকে। অনেকেই বলছেন, মোদীর শহর বলে ভাদনগরকে এতটাই প্রধান্য দেওয়া হচ্ছে! আদৌ তা নয়। ভাদনগর হল পৌরাণিক কালের। শ্রীকৃষ্ণের নেতৃত্বে এখানে এসেছিলেন যাদবকুল। ভাদনগরের নাম ছিল সেকালে আনর্ত। পরবর্তী কালে নাম বদলে হয়েছিল আনন্দপুর বা অনর্থপুর। ভাদনগরের অন্য আরও একটি নাম ছিল স্কন্ধপুর। একটা সময় ভাদনগর ছিল গুজরাতের রাজধানী। এখানে এসেছিলেন চিনা পরিব্রাজক হিউয়েন সাং-ও। পুরনো কালের বহু স্থাপত্যকলা রয়েছে ভাদনগরে।
ভাদনগরে রয়েছে বহু শিব মন্দির। তার মধ্যে বিখ্যাত হল ১৫ শতকের হাতকেশ্বর মহাদেব। শিতলা মাতা মন্দিরও খুব সুন্দর। এই মন্দিরের ভিতরের ছাদে রয়েছে কৃষ্ণের রাসলীলা। অপূর্ব কাজ! একটা ঐতিহাসিক পরিচয় রয়েছে ভাদনগরের। ইতিহাসপ্রেমীদের কাছে একটা অন্য মূল্য আছে মোদীর শহরের। মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর ভাদনগরের পরিচিতি বেড়েছে নিশ্চয়। কিন্তু ইতিহাসের দিক থেকে ভাদনগর নিজেই নিজের পরিচয় বহন করে আসছে।