চ্যানেল হিন্দুস্তান ব্যুরো।
মহালয়া (Mahalaya) মানেই দুর্গা পুজোর দিন গোনা শুরু হয়ে যাওয়া। অর্থাৎ পিতৃপক্ষের শেষ, দেবীপক্ষের সূচনা। কিন্তু এবছর মহালয়া একমাস পরে পড়েছে দুর্গাপুজো। কারণ এ বছর আশ্বিন মাসে দুটি অমাবস্যা পড়েছে। যা পুরোহিতদের মতে বা পঞ্জিকা মতে অশুভ লক্ষণ । অর্থাৎ হিন্দু মতে যাকে বলে মল মাস । আশ্বিন মাসে দুর্গা পুজো সম্ভব হয় না। তাই দেবীপক্ষ শুরু হবে মল মাস শেষে দেবীপক্ষের শুরু হবে ১৭ অক্টোবর। ৩০ আশ্বিন। তবে হিন্দু মতে মহালয়ার দিনটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। মহালয়া কথাটির বিশেষ অর্থ রয়েছে। পিতৃপক্ষের অবসান বা দেবীপক্ষের পূর্ববর্তী অবস্থাকে বলা হয় মহালয়া। পিতৃপক্ষের অবসানের পর শুরু হয় দেবীপক্ষের সূচনা। পিতৃতর্পণের মাধ্যমে আমরা পিতৃপুরুষদের প্রতি শ্রদ্ধা ও প্রণাম ও সম্মান নিবেদন করা হয় ।
এখন যুগ পরিবর্তেনের সঙ্গে সঙ্গে পুরুষের পাশাপাশি মহিলারাও এখন ঘাটে নেমে এক বুক গলা জলে দাঁড়িয়ে তর্পণ করেন। স্মরণ করেন সেই সব আপন জনদের। যাঁরা একসময় খুব কাছের ছিলেন। আজ তাঁরা পরলোকে। ঠিক সেইভাবে এদিন সকাল বেলা নিমতলা ঘাটে দেখা গেল প্রচুর মানুষকে ,যারা সকালবেলায় চলে এসেছেন তর্পণ করতে । সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়ে যায় তর্পণ । তবে প্রতি বছরের মতো এবছরও চোখে পড়ল না মানুষের বিশাল সংখ্যাটা। অবশ্যই সৌজন্যে করোনা ভাইরাসের (Coronavirus) সংক্রমণ। যে সমস্ত মানুষজন এসেছে তারা নিজেদের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এদিন পিতৃপক্ষের উদ্দেশ্যে জল দান করেন। উপস্থিত ছিলেন পুরোহিতমশাইরাও। যাদের সঙ্গে সঙ্গে সমস্ত মানুষের কণ্ঠে ধ্বনিত হয় তর্পনের মন্ত্র উচ্চারণ করেন। পিতৃ পুরুষের উদ্দেশ্যে জল দান করেন।
এর পাশাপাশি যে বিষয়টি আরো বেশি উল্লেখযোগ্য তা হলো হলো জলপথে এবছর কলকাতা পুলিশের তরফ থেকে বিশেষ বাহিনী নিয়োগ করা হয়েছে। যারা জলপথে স্পিড বোর্ড বা নৌকা করে ঘাটের কাছাকাছি একটু বা একটু দূরে ক্রমাগত ঘোরাফেরা করছে। কারণ যদি কোনো অঘটন ঘটে যায় তাহলে তারা সেখানে উপস্থিত থাকবেন মানুষের সহায়তার জন্য। এছাড়া মাইকিং ব্যবস্থা রয়েছে। মানুষ যেন অতিরিক্ত জলে না নামে সেই দিকটা প্রচার করে জানান হচ্ছে এবং নিজেদের মধ্যে যেন সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখে সেই দিকটা মাইকিং এর মাধ্যমে সাধারন মানুষজনকে জানানো হচ্ছে। প্রসঙ্গত, পুরাণ অনুযায়ী মহালয়ার দিনেই দেবী দুর্গা মহিষাসুর বধের দায়িত্ব পান। ব্রহ্মার বর অনুযায়ী কোনও মানুষ বা দেবতা দ্বারা মহিষাসুরকে বধ করা সম্ভব ছিল না। একমাত্র নারী শক্তির দ্বারা সম্ভব ছিল তাঁকে বধ করা। তাই ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও শিব শক্তি দ্বারা সৃষ্ট নারীশক্তি সিংহবাহিনী মা দুর্গা মহিষাসুরকে পরাজিত করে বধ করেন। এভাবেই দেবীর আগমণ ঘটে মর্ত্যে।