Breaking News
Home / TRENDING / রাজস্থানে পরাজিত বিজেপির থেকে শিক্ষা নিক পশ্চিমবঙ্গের জয়ী তৃণমূল, জেনে নিন কি শিক্ষা

রাজস্থানে পরাজিত বিজেপির থেকে শিক্ষা নিক পশ্চিমবঙ্গের জয়ী তৃণমূল, জেনে নিন কি শিক্ষা

সুমন ভট্টাচার্য্য

ডিলিমিটেশনের পরে কলকাতা শহরের বিধানসভা আসনের সংখ্যা কমে হয়ে গিয়েছে ১১। তার আগে কলকাতায় যখন ২২টি কেন্দ্র ছিল, তার মধ্যে একটি কেন্দ্র ছিল বেলগাছিয়া পশ্চিম। ৮০ এর দশকে সেই কেন্দ্র থেকে একবার বিধানসভার উপনির্বাচনে লড়েছিলেন সেই সময়ে সিপিএমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা লক্ষী সেন। সেই উপনির্বাচনে লক্ষ্মীবাবুর বিরুদ্ধে প্রার্থী ছিলেন কংগ্রেসের দাপুটে নেতা অমর ভট্টাচার্য্য। বিধানসভার সেই উপনির্বাচন ঘিরে তুমুল গণ্ডগোলের মধ্যে কংগ্রেসের অমর ভট্টাচার্য্যকে গাড়ি সহ মারাঠা খালে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। অমরবাবু কোনওরকমে গাড়ি থেকে নেমে প্রাণে বাঁচলেও তাঁর সাদা অ্যাম্বাসাডারটির স্থান হয়েছিল মারাঠা খালের জলে। সেই ছবি পরের দিন অনেক দৈনিক সংবাদপত্রের পাতায় ছাপাও হয়েছিল। ডিলিমিটেশনের পরে কলকাতা শহরের বিধানসভা আসনের সংখ্যা কমে হয়ে গিয়েছে ১১। তার আগে কলকাতায় যখন ২২টি কেন্দ্র ছিল, তার মধ্যে একটি কেন্দ্র ছিল বেলগাছিয়া পশ্চিম। ৮০ এর দশকে সেই কেন্দ্র থেকে একবার বিধানসভার উপনির্বাচনে লড়েছিলেন সেই সময়ে সিপিএমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা লক্ষী সেন। সেই উপনির্বাচনে লক্ষ্মীবাবুর বিরুদ্ধে প্রার্থী ছিলেন কংগ্রেসের দাপুটে নেতা অমর ভট্টাচার্য্য। বিধানসভার সেই উপনির্বাচন ঘিরে তুমুল গণ্ডগোলের মধ্যে কংগ্রেসের অমর ভট্টাচার্য্যকে গাড়ি সহ মারাঠা খালে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। অমরবাবু কোনওরকমে গাড়ি থেকে নেমে প্রাণে বাঁচলেও তাঁর সাদা অ্যাম্বাসাডারটির স্থান হয়েছিল মারাঠা খালের জলে। সেই ছবি পরের দিন অনেক দৈনিক সংবাদপত্রের পাতায় ছাপাও হয়েছিল।  অ্যাম্বাসাডার এখন অতীত। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের উপনির্বাচনে গণ্ডগোলটা এখনও প্রবলভাবে বাস্তব। শুধু ঝাণ্ডার রঙটা বদলে গিয়েছে, বাকি কোনও কিছুই বদলায়নি। আগে ডানপন্থীরা অভিযোগ করতেন নির্বাচনে সন্ত্রাসের, এখন বামপন্থীরা সেই একই অভিযোগের ‘রিমেক’ বাজারে ছাড়ছেন। পশ্চিমবঙ্গে ভোট মানেই গণ্ডগোল, সন্ত্রাস, ছাপ্পাভোটের অভিযোগ- এটাই গত ৪০ বছরের বাস্তব। জেএনইউতে বামপন্থী ছাত্র ইউনিয়নের নেতা থেকে রাহুল গান্ধীর ব্রিগেডে ঢুকে কংগ্রেস নেতা হয়ে যাওয়া শাকিল আহমেদ খান একবার আমাকে দিল্লিতে প্রশ্ন করেছিলেন, ‘ভাই, এত রাজ্যে তো ভোট হয়, কোথাও তোমাদের মতো গণ্ডগোল হয় না। মহারাষ্ট্রে আমরা সরকারে ছিলাম, ভোট হল, বিজেপি ক্ষমতায় এল। পাঞ্জাবে অকালি-বিজেপি ক্ষমতায় ছিল, ভোটে জিতে আমরা সরকার গড়লাম। কই, নির্বাচনে হাঙ্গামা, ছাপ্পা ভোট-এগুলো তো শুনিনি”। শাকিল কিছুদিন আগে অবধি এআইসিসির তরফে পশ্চিমবঙ্গের জন্য পর্যবেক্ষক ছিলেন, এখন বিহারের নির্বাচিত বিধায়ক। শাকিলের প্রশ্ন আমাকে যথেষ্ঠই বিড়ম্বনায় ফেলে দিয়েছিল।  শাকিল অবশ্য একা নন, দিল্লিতে কংগ্রেস, বিজেপির বহু নেতার কাছেই এই প্রশ্ন শুনেছি যে পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচন ঘিরে এত উত্তেজনা বা দাঙ্গা-হাঙ্গামা হয় কেন? বিজেপির নেতা অধুনা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাভরেকর একবার আদবানির রথযাত্রার সময় আমায় ধরে প্রায় জেরা করতে শুরু করে দিয়েছিলেন, পশ্চিমবঙ্গে ভোট মানেই এত অভিযোগের বন্যা কেন? ভিন রাজ্যের রাজনীতিকদের এটা বোঝানো কঠিন যে পশ্চিমবঙ্গে ব্যালটের যুদ্ধ আসলে যুদ্ধই, সেখানে সংঘর্ষ তো নিতান্ত স্বাভাবিক ঘটনা। প্রাণহানি না হলেই লোকে অবাক হয়। পশ্চিমবঙ্গে শাসন ক্ষমতা থেকে বামেরা চলে গিয়ে তৃণমূল আসলেও আসলে পরিস্থিতির কোনও ‘পরিবর্তন’ হয় নি।  এবারেও উপনির্বাচনে দেখুন, রাজস্থান এবং পশ্চিমবঙ্গে ভোট হলেও এ রাজ্যের ভোট ঘিরে বিরোধীদের যাবতীয় অভিযোগ। বিজেপির এক সর্বভারতীয় নেত্রী, পূজা কপিল মিশ্র, যিনি আদতে রাজস্থানের বাসিন্দা, বলছিলেন, “এই দেখুন না রাজস্থানে তো আমরা ক্ষমতায়। উপনির্বাচন হল, কংগ্রেস জিতলো। ভোটের আগে, পরে আমরা অথবা কংগ্রেস কেউ সন্ত্রাস বা বুথ দখল নিয়ে অভিযোগ করিনি। তাহলে আপনাদের পশ্চিমবঙ্গের উপনির্বাচন নিয়ে এতো অভিযোগ কেন?” আসলে ভোটে দাঙ্গা-হাঙ্গামা যে পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক সংস্কৃতির অঙ্গ হয়ে গিয়েছে, এটা আর গোটা ভারতবর্ষ বিশ্বাস করতে চায় না। কোনও ‘সভ্য’ সমাজই কেন  বিশ্বাস করবে  যে ভোট মানেই পশ্চিমবঙ্গের বুথ দখল, ছাপ্পা, গ্রামে গ্রামে ভয় দেখানো? আর উপনির্বাচন হলে তো কথাই নেই। আজমের আর উলুবেড়িয়ার লোকসভা উপনির্বাচনের বিপরীত চিত্র আবার প্রমাণ করে দিয়ে গেল বাংলা রয়েছে বাংলাতেই।

 

বিভিন্ন বিষয়ে ভিডিয়ো পেতে চ্যানেল হিন্দুস্তানের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

https://www.youtube.com/channelhindustan

https://www.facebook.com/channelhindustan

Spread the love

Check Also

চোরেদের মন্ত্রীসভা… কেন বলেছিলেন বাঙালিয়ানার প্রতীক

ডঃ অরিন্দম বিশ্বাস : আজ বাংলার এবং বাঙালির রাজনীতির এক মহিরুহ চলে গেলেন। শ্রী বুদ্ধদেব …

আদবানি-সখ্যে সংকোচহীন ছিলেন বুদ্ধ

জয়ন্ত ঘোষাল : লালকৃষ্ণ আদবানির বাড়িতে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য মধ্যাহ্ন ভোজে আসবেন। বাঙালি অতিথির আপ্যায়নে আদবানি-জায়া …

নির্মলার কোনও অর্থনৈতিক চিন্তা-ভাবনা নেই

সুমন ভট্টাচার্য এবারের বাজেটটা না গরিবের না মধ্যবিত্তের না ব্যবসায়ীদের কাউকে খুশি করতে পারলো। দেখে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *