চ্যানেল হিন্দুস্তান ব্যুরো।
একুশের বিধানসভা ভোটকে মাথায় রেখে এবার তৃণমূল কংগ্রেসের হিন্দি সেল (Trinamool Congress Hindi Cell) তৈরি হল। সোমবার এক ভার্চুয়াল সাংবাদিক সম্মেলনে দলের এই নতুন সংগঠনের কথা ঘোষণা করেন প্রাক্তন রেলমন্ত্রী দীনেশ ত্রিবেদী ও প্রাক্তন রাজ্যসভার সাংসদ বিবেক গুপ্তা (Vivek Gupta)। সাংবাদিক সম্মেলন করে তৃণমূলের এই দুই হিন্দিভাষী নেতা বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রীর অনুপ্রেরণায় তারা নতুন এই সংগঠনটি তৈরি করেছেন। ২০১১ সাল থেকেই রাজ্যে হিন্দিভাষীদের জন্য একাধিক উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নিয়েছেন তিনি। এবার হিন্দি ভাষাভাষী মানুষদের সাংগঠনিক কাজে লাগিয়ে আরও বেশি করে সুযোগ-সুবিধা দিতে চান মুখ্যমন্ত্রী। সঙ্গে তাদের সংস্কৃতি ও কৃষ্টিকে আরও বেশি সমৃদ্ধ করতে চান তিনি। ঘটনাচক্রে এদিনই রাষ্ট্রীয় হিন্দি দিবস। সেই দিনই ঘোষিত হল তৃণমূল কংগ্রেসের এই হিন্দি সেল। সাংবাদিক সম্মেলন শেষে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, রাজ্য, জেলা ও ব্লক স্তরে গঠিত হবে তৃণমূল হিন্দি সেলের কমিটি।
তৃণমূল কংগ্রেসের হিন্দি সালে সর্বভারতীয় সভাপতি করা হয়েছে ব্যারাকপুরের প্রাক্তন সাংসদ দীনেশ ত্রিবেদীকে (Dinesh Trivedi)। রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ বিবেক গুপ্তাকে করা হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সংগঠনের সভাপতি। আচমকাই কেন হিন্দি দিবস পালন ও হিন্দি সংগঠনের গঠন ? এর পিছনে কি কোনও রাজনীতি রয়েছে ? এমন প্রশ্নের উত্তরে রাজ্যসভার সাংসদ দীনেশ ত্রিবেদী বলেছেন, “পশ্চিমবঙ্গ এমন একটি জায়গা এখানে মুক্তমনে সবাই নিজের মতামত প্রকাশ করতে পারেন। কারো চিন্তা ভাবনায় কোনও বাধা নেই। তাই এই বিষয়টিকে একটি রাজনৈতিক পদক্ষেপ সংবাদমাধ্যম ভাবতেই পারেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই উদ্যোগের সঙ্গে রাজনীতির সরাসরি কোনও যোগাযোগ নেই।”
এদিনের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আপাতত সাংগঠনিকভাবে দুজন শীর্ষ নেতার নাম ঘোষণা করা হল। আগামী দিনে দলের পক্ষ থেকে এই সংগঠনের যাবতীয় নেতা-নেত্রীদের নাম ঘোষিত হবে। তবে দীনেশ ত্রিবেদী জানিয়েছেন, নামে তৃণমূল কংগ্রেসের হিন্দি সেল হলেও, সংগঠনের জায়গা দেওয়া হবে সমস্ত ভাষার মানুষকে। দেশের পূর্ব থেকে পশ্চিম উত্তর থেকে দক্ষিণ সব প্রান্তের মানুষকেই এই সংগঠনে জায়গা দেবে তৃণমূল নেতৃত্ব।
এমন একটি সংগঠন প্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক মহল মনে করছে, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল বিশ্লেষণ করে ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোর দেখেছেন, হিন্দিভাষী এলাকার সিংহভাগ ভোটে ভাগ বসিয়েছে বিজেপি। একুশের ভোটে সেই ভোটব্যাংকে থাবা বসাতে তথা ফিরিয়ে আনতে নতুন এই সংগঠন তৈরির কথা ভেবেছেন তিনি। ভোট কৌশলীর পরামর্শে দলের হিন্দি সেল গঠনের পক্ষে সায় দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো ও তাঁর সাংসদ ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। কিন্তু প্রশান্ত কিশোরের এই চাল কতদূর কার্যকর হয় তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে একুশের ভোট পর্যন্ত।