চ্যানেল হিন্দুস্তান :
তৃণমূলের রাজ্য সমন্বয় কমিটির প্রথম বৈঠকে গরহাজির পরিবহনমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। গত কয়েক মাস ধরে তৃণমূলের অন্দরমহলের রাজনীতিতে শুভেন্দুকে নিয়ে জোর অশান্তির বাতাবরণ তৈরি হয়েছে বলে সূত্রের খবর। ২৩ জুলাই তৃণমূল (TMC) সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) দলের নতুন কমিটির কথা ঘোষণা করে দেন। সেই রদবদলের শুভেন্দু অধিকারীকে দেওয়া হয়েছে রাজ্য সংগঠনের সাধারন সম্পাদকের পদ। সূত্রের খবর, এই পথ পেয়ে খুশি নন শুভেন্দু। কারণ, রাজনীতিতে অভিজ্ঞতায় ও অবদানে তৃণমূল কংগ্রেসে অনেকের চেয়ে বেশি কর্তৃত্বের অধিকারী নন্দীগ্রাম বিধায়ক।
শুধু এই রদবদল নয়, দীর্ঘ সময় ধরে চলা তৃণমূল অভ্যন্তরীণ রাজনীতির সমীকরণের হাতবদল নিয়েও শিশির অধিকারী পুত্রের ক্ষোভের খবর প্রায়ই শোনা যায়। এদিনের বৈঠকে তাঁর না আসার কারণ হিসেবে তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, পরিবহনমন্ত্রী নিজেই ব্যক্তিগত কাজের অজুহাত দেখিয়ে আসতে চাননি। পরের পরের সমন্বয় কমিটির বৈঠক থেকে তিনি যোগ দেবেন বলে জানিয়েছেন। দিন পনের পর আবারও এই কমিটি বৈঠকে বসবে। সেই বৈঠকে নন্দীগ্রাম বিধায়ক হাজির হবেন বলেই আশা প্রকাশ করেছে তৃণমূলের শীর্ষ নেতারা।
তাঁর অনুপস্থিতি প্রসঙ্গে একটি কারণ জানা যাচ্ছে। এ দিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোর (Prashant Kishor)। সমন্বয় কমিটির বৈঠকে পিকে স্যারের উপস্থিতির কারণেই শুভেন্দু অধিকারী হাজির হননি বলেও দাবি করছে একটি সূত্র। তাদের যুক্তি, তৃণমূলে প্রশান্ত কিশোরের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে প্রথম থেকেই আপত্তি ছিল শুভেন্দু অধিকারীর। তাঁর আপত্তির কথা দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। তা সত্বেও তৃণমূল তাঁর সংযুক্তির রুখতে পারেননি পরিবহনমন্ত্রী। লোকসভা নির্বাচনে শোচনীয় পরাজয়ের পর আর এবিষয়ে ঝুঁকি নিতে চায়নি তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর সাংসদ ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। পরামর্শদাতা হিসেবে প্রশান্ত কিশোরের আগমনকে সেই ভালো চোখে দেখেননি শুভেন্দু। পরে প্রশান্ত কিশোরের ঠিক করে দেওয়ার টাস্ক ‘দিদিকে বলো’ কিংবা ‘বাংলার গর্ব মমতা’ অংশ নেননি তিনি। তাই মনে করা হচ্ছে প্রশান্ত কিশোরের এদিনের বৈঠকে পিকে স্যারের হাজিরার খবর পেয়েই সযত্নে দলের সমন্বয় কমিটির বৈঠক এড়িয়ে গিয়েছেন তমলুকের প্রাক্তন সাংসদ।
পরিবহনমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী ছাড়াও, দিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন মন্ত্রী তথা শীতলকুচি বিধায়ক হিতেন বর্মন, পুরুলিয়া প্রাক্তন সংসদ ও বর্ধমান জেলা পরিষদের প্রাক্তন সভাধিপতি দেবু টুডু। এই চারজনের মধ্যে দেবু টুডু কেবলমাত্র করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার কারণে বৈঠকে যোগ দিতে পারেননি।