কমলেন্দু সরকার :
রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের প্রেসিডেন্ট মহারাজ আত্মস্থানন্দজি যাত্রা করলেন রামকৃষ্ণলোকে গতকাল বিকেল সাড়ে পাঁচটায়। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৯। গত বছর তিনেক তিনি ভুগছিলেন বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যায়। জানা গেছে, আজ ঠিক ৯.৪৫ মিনিটে দাহকার্য শুরু হবে বেলুড় মঠে গঙ্গা তীরে।
প্রেসিডেন্ট মহারাজ আত্মস্থানন্দজি মানুষকে ভালবাসতেন। যথার্থ অর্থে সেবা করতেন। বিবেকানন্দের আদর্শ মেনে চলতেন মনেপ্রাণে। এমন বহু কাজ তিনি করেছিলেন অতীতে।
ভুজে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের ছুটে গিয়েছিলেন। তখন তিনি ভাইস প্রেসিডেন্ট। তিনি নিজে দাঁড়িয়ে থেকে তদারকি করেছিলেন ত্রাণের সব কাজই। কোনও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের খবর পেলেই ছুটে যেতে তাঁর কোনও দ্বিধা ছিল না। শুনেছি, মঠের সকলকেই বলতেন, তৈরি থেকো যেতে হবে আমাদের।
স্বামী আত্মস্থানন্দজি মানুষের দুঃখ দুর্দশায় ছুটে গিয়েছেন বার বার। সত্তর দশকের গোড়ায় গুজরাতের ভয়ংকর বন্যায় তাঁর কাজ আজ মানুষ মনে রেখেছে। এইসব কাজে তাঁর মুখে সদা লেগে থাকত হাসি। হাসিমুখে সব কাজ করে যেতেন। ২০০৭ সালে সর্বসম্মতিতে হয়েছিলেন রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের প্রেসিডেন্ট। স্বামী আত্মস্থানন্দজি মহারাজ ছিলেন পঞ্চদশ প্রেসিডেন্ট।
তাঁর পূর্বাশ্রমের নাম সত্যকৃষ্ণ ভট্টাচার্য। ১৯১৯-এর ২১ মে জন্মগ্রহণ করেন ঢাকার কাছে শাবাজপুরে। বনেদি পরিবারের সত্যকৃষ্ণ ভট্টাচার্য মাত্র ১৯ বছর বয়সেই রামকৃষ্ণ মঠে। স্বামী বিজ্ঞানানন্দ মহারাজ তাঁর গুরু। স্বামী বিজ্ঞানানন্দ ছিলেন রামকৃষ্ণের সাক্ষাৎশিষ্য। তিনি বেলুড় মঠে এসে স্বামী বিরজানন্দজি মহারাজের কাছে ব্রহ্মচর্যের দীক্ষালাভ করেন। পরবর্তী কালে পরিচিত হন স্বামিনী আত্মস্থানন্দ নামে। ব্রতী হলেন সন্ন্যাসজীবনে। তারপর থেকেই সারা জীবন মানুষের সেবা করে গিয়েছেন।