নীল বণিক :
ভাঙড়ের অনিচ্ছুক চাষিদের আন্দোলকে ঠেকাতে প্রশাসনিক কর্তাদের উপর আস্থা রেখেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রথমে অবশ্য তিনি এই জন্য ভরসা রেখেছিলেন রাজারহাটের বিধায়ক তথা বিধাননগরের মেয়র সব্যসাচী দত্তের ওপর। কিছু দিন পরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুঝতে পারেন সব্যসাচী দত্তকে দিয়ে হবে না। তার পরেই ভাঙর আন্দোলনকে প্রতিহত করতে মুখ্যমন্ত্রী ভরসা করেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের উপর। তিনি একসময় বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের পুলিশ কমিশনার ছিলেন। তাই ভাঙড় এলাকা ভাল করেই চিনতেন রাজীব কুমার। সিন্ডিকেট মাফিয়া থেকে জমি হাঙরদের হাতের তালুর মতো চিনতেন রাজীব কুমার। মুখ্যমন্ত্রীর থেকে দায়িত্ব পাবার পরেই কাজে নামেন তিনি। সূত্রের খবর ভাঙড় আন্দোলনের অনেক নেতাকে নিয়েই পার্ক স্ট্রিটের একটি জায়গায় বৈঠক করেন রাজিব কুমার। সাংবাদিকরাও এই বৈঠকের কথা ঘুণাক্ষরে জানতে পারেননি। রাত দশটার পরে এই বৈঠক আজ থেকে প্রায় দু’মাস আগে হয়। রাজীব কুমার প্রথমেই বিক্ষোভকারী নেতাদের আশ্বস্ত করেন আস্তে আস্তে মামলা তুলে নেওয়া হবে। এমনকী চাষিদের সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের থেকে সাহায্য করা হবে। সেই দিনের সেই বৈঠকে অবশ্য বিক্ষোভকারীদের মনে চিঁড়ে ভেজাতে পারেননি রাজীব কুমার।তারপরেও হাল ছাড়েন নি দুঁদে এই আইপিএস। প্রতিনিয়ত আন্দোলনরত। কয়েকজন নেতার সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছিলেন তিনি। নরমেগরমে এভাবেই কয়েকজন নেতাকে বাগে আনতে সক্ষম হন রাজীব কুমার। তারপরেই সেই সব নেতাদের সিআইডির জেরার হাত থেকে রক্ষা করেন তিনি। আর তখনই সেই সুযোগকে কাজে লাগাতে নেমে পরেন আরাবুল ইসলাম। পঞ্চায়েত সমিতির প্রধান হওয়ায় বাড়তি সুবিধা পান আরাবুল। বিক্ষোভরত চাষীদের জমির পাট্টা সহ সেচের ব্যবস্থা করে দেবার প্রতিশ্রুতি দেন আরাবুল ইসলাম। তারপরেই বিক্ষোভকারি চাষিদের মধ্যে ভাঙন ধরতে শুরু করে। যার ফল ইতিমধ্যেই পেতে শুরু করেছেন তৃনমুল নেতৃত্ব। এক সপ্তাহের মধ্যেই প্রায় একশো জন কৃষক ঘর ওয়াপসি করলেন। অর্থাৎ ফের তৃণমূলে নাম লেখালেন।