কমলেন্দু সরকার :
যত দিন যায় তত কৃষ্ণের দুষ্টুমি বাড়ে। কিছুতেই তাকে আর সামলানো যায় না। প্রতিবেশী প্রায় সকলেই তার নামে অভিযোগ জানায়। মা যোশদা সব শোনেন। তার গোপালকে শাসন করবেন কী ছোট্ট ছোট্ট হাতে যখন আঁকড়ে ধরে তখন সব ভুলে যান যশোদা। তাঁর ছোট্ট গোপাল যে রয়েছে জীবন জুড়ে। তাঁর আদরের গোপাল।
অনেকেই এসে যশোদাকে বলে, তোমার গোপাল অনেক ছল-চাতুরি করতে শিখেছে। বড় হলে কী যে হবে! বাঁধা বাছুরকে খুঁটি থেকে খুলে দেয়। বাঁধন-হারা বাছুর গাভীর সব দুধ খেয়ে নেয়। এমনকী ননী চুরি করে খেয়ে নেয়। আবার বন্ধুদেরও বিলোয়। কিছু বললে আমাদের বেণি ধরে টানও মারে।
যশোদা সব শোনেন। মাঝেমধ্যে শাসনও করেন তাঁর আদরের গোপালকে। এভাবেই দিন যায়। ক্রমশ বড় হয় কৃষ্ণ-বলরাম। একদিন হয়েছে কি যশোদাকে কৃষ্ণের গোপ-বন্ধুরা এসে বলল, দেখো না কৃষ্ণ মাটি খেয়েছে। এই অভিযোগকারীদের দলে কৃষ্ণ-ভ্রাতা বলরামও ছিল। কৃষ্ণ বলল, ওরা সব মিছে কথা বলছে। আমি মাটি খাইনি। মা তুমি দেখো না আমি হাঁ করছি। তাহলে তো আমি মিছে না সত্যি বলছি।
যশোদার সামনে বালক কৃষ্ণ একটা বিশাল হাঁ করল। এ কী দেখছেন যশোদা! কৃষ্ণের মুখের ভিতর সারা বিশ্বচরাচর! মাতা যশোদাকে বিশ্বরূপ দর্শন করাল বালক কৃষ্ণ। এসব দেখে যশোদা অবাক! এ কী দেখালো তাঁর গোপাল! পরম মমতায় আদর করতে লাগলেন যশোদা। বুঝতে পারলেন তাঁর আদরের গোপালের দেবমায়া!