দেবক বন্দ্যোপাধ্যায় :
মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানকে যে ভাষায় আক্রমণ করেছেন তা মেনে নিতে পারছেন না বিশিষ্টদের অনেকেই। মুখ্যমন্ত্রীকে অনুসরণ করে তাঁর দুজন ক্যাবিনেট মন্ত্রীও রাজ্যপাল সম্পর্কে ‘অপমানকর’ মন্তব্য করেছেন।
রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান সম্পর্কে এই ধরনের মন্তব্য ভাল ভাবে নিচ্ছেন না অনেকেই।
প্রাক্তন চিফ জাস্টিস অশোক গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘প্রশ্ন করলেই আমাদের মুখ্যমন্ত্রী অপমানিত বোধ করেন। এটা আমরা আগেও দেখেছি। সাধারণ চাষী শিলাদিত্য তাঁকে প্রশ্ন করেছিেলন, তাতেও তিনি অপমানিত হয়ে শিলাদিত্য-কে মাওবাদী বলেছিলেন। রাজ্যপালকে আর মাওবাদী বলে উঠতে পারেননি, বিজেপির ব্লক নেতা বলেছেন!’ কোনও ব্যাক্তিকে খাটো করার জন্য ‘ব্লক সভাপতি’ শব্দটি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রায় নিয়ম করে ব্যবহার করেন। এই ব্যাপার সিপিএমের গৌতম দেব থেকে মোর্চার গুরুঙ্গ আর লক্ষণ শেঠ থেকে কেশরী নাথ ত্রিপাঠিকে মিলিয়ে মিশিয়ে একাকার করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁরই দলের এক ব্লক সভাপতির মন্তব্য ‘আমরা সরাসরি মানুষের সঙ্গে থেকে দলটা করি। দিদির কাছে কী আমরা এতই গুরুত্বহীন! আমাদের পদটিকে প্রায় গালাগালির পর্যায়ে নামিয়ে এনেছেন দিদি।’ তবে মুখ্যমন্ত্রীকে প্রশ্ন করার সম্পূর্ণ এক্তিয়ার যে রাজ্যপালের আছে তা পরিস্কার জানিয়ে দেন প্রবীন আইনজ্ঞ অশোক গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘রাজ্যপাল জানতে চাইতেই পারেন। এটা তাঁর এক্তিয়ারের মধ্যেই পড়ে। তবে তিনি খারাপ ভাবে কথা বলেছেন না ভালভাবে? সেটা আমরা দেখতে বা শুনতে পাইনি। তবে রাজ্যপালকে আমি সজ্জন মানুষ বলেই জানি। তিনি বিজেপির নেতার মত কথা বলবেন বা হুমকি দেবেন বলে আমার মনে হয় না। তবে মুখ্যমন্ত্রী ও তাঁর মন্ত্রীরা তাঁর সম্পর্কে যে ভাষায় কথা বলছেন তা অভাবনীয়।’ রাজ্যপাল সম্পর্কে অপমানজনক আচরণ করার জন্য সংবিধানে কি কোনও শাস্তির বিধান আছে? অশোকবাবুর উত্তর, রাজনীতি যে এত নীচে নামবে সংবিধান প্রণেতারা সম্ভবত তা ভেবে উঠতে পারেননি। তাই কোনও শাস্তির উল্লেখ করে যাননি।’
লাইক শেয়ার ও মন্তব্য করুন
বিভিন্ন বিষয়ে ভিডিয়ো পেতে চ্যানেল হিন্দুস্তানের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন