কমলেন্দু সরকার :
বিজেপি নেতারা এখন বিরোধী দলের অফিসে অফিসে ঘুরছেন। রাষ্ট্রপতি পদে তাদের নির্বাচিত প্রার্থীকে সমর্থন আদায়ের জন্য এই যাতায়াত। বিরোধীদের কাছ থেকে এখনও কোনও কথা আদায় করতে পারেননি। সনিয়া গান্ধীর সঙ্গে দেখা করার পর বিজেপি নেতারা এ কে গোপালন ভবনে সীতারাম ইয়েচুরির সঙ্গে দেখা করেন। তিনিও বিজেপি-র অনুরোধ রাখেননি।
রাজনৈতিক মহল মনে করছে, এটা নাকি বিরোধীদের মধ্যে ফাটল ধরানোর খেলা খেলছে ভারতীয় জনতা পার্টি। আবার অনেকেই মনে করছেন, যাতে পরে কোনও দল বলতে না-পারে, না-জানিয়েই রাষ্ট্রপতি প্রার্থীপদ ঠিক করে নিল শাসক দল। আবার কেউ কেউ মনে করছেন, শাসক দল নাকি রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে হাতের তাস দেখাবে না বলে এমন খেলা খেলছে।
শোনা যাচ্ছে, বিজেপি নাকি রাষ্ট্রপতি পদে তাদের প্রার্থী ঠিক করে ফেলেছে। সুষমা স্বরাজকে নাকি প্রার্থী করা হচ্ছে। তাহলে কী সুষমাকে সরাতে চাইছে শাসক দলের কেউ কেউ। এমনটাই ধারণা রাজনৈতিক মহলের! সুষমা স্বরাজকে যদি মূল রাজনীতি থেকে সরিয়ে রাষ্ট্রপতির পদে বসিয়ে দেওয়া হয় তা হলে মস্ত ভুল হবে বিজেপি-র। বিরোধীদের মধ্যে পছন্দসই যে ক’জন বিজেপি নেতা আছেন তার মধ্যে সুষমা একনম্বরে। তাছাড়া সুষমা সাধারণ এবং বুদ্ধিজীবী মহলেও জনপ্রিয়। বিদেশেও তিনি অত্যন্ত গ্রহণীয় এক ব্যক্তিত্ব।
রাজনৈতিক মহলের ধারণা, সুষমাকে নাকি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী খুব-একটা পছন্দ করেন না। অনেকে তো ভেবেই নিয়েছিলেন সুষমা হয়তো কোনও গুরুত্বহীন মন্ত্রী হবেন। কিন্তু দলের ভিতরের চাপে তাঁকে মন্ত্রীসভায় ভাল জায়গা দিতে বাধ্য হয়েছিলেন।
ভারতীয় জনতা পার্টির থিংক ট্যাংকের অন্যতম নেতা হলেন সুষমা স্বরাজ। এমন এক নেতাকে সরিয়ে দেওয়া মানে দলের কাছে ভুল কাজ হবে। ভুল বার্তাও যাবে সাধারণের কাছে। যেমনটি হয়েছে কংগ্রেসের। প্রণব মুখোপাধ্যায়কে রাষ্ট্রপতি করে সরিয়ে দেওয়া মস্ত ভুল হয়েছে বলে মনে করে রাজনৈতিক মহল। এই মহল আরও মনে করে, আজ যদি প্রণব মুখোপাধ্যায় কংগ্রেসে থাকতেন তাহলে কংগ্রেসের এই দুর্দশা হত না। অনেক কংগ্রেসীকেও বলতে শুনেছি প্রণবদা থাকলে এখন অনেক ভাল হত। শুনেছি মিসেস গান্ধীও বিপদেআপদে প্রণবদার সঙ্গে পরামর্শ করতেন। প্রণব মুখোপাধ্যায়কে রাষ্ট্রপতির করার মাশুল আজ গুনতে হচ্ছে কংগ্রেসকে। সুষমাকেও যদি বিজেপি এমনটা করে তাহলে একই ভুল করবে বিজেপি। এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞেরা।