Breaking News
Home / TRENDING / Exclusive-বাদুড়িয়া নিয়ে গান লিখতে প্রবৃত্তি নেই ক্যাকটাসের সিধুর, জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত অনুপমেরও এইসবে রুচি নেই

Exclusive-বাদুড়িয়া নিয়ে গান লিখতে প্রবৃত্তি নেই ক্যাকটাসের সিধুর, জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত অনুপমেরও এইসবে রুচি নেই

মধুমন্তী  :

যুগ বদলেছে।
জীবনানন্দ দাশকে নিত্য বৌয়ের গঞ্জনা শুনতে হত। কবির কলমে তখন কবিতা আসত ঢের কিন্তু পকেটে পয়সা আসত না। একদিন সেইসময়ের আরেকজন কবি বীরেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়কে জীবনানন্দ বলেছিলেন, “বীরেন সিনেমার গান লিখলে এখন নাকি অনেক রোজগার হয়। আমি যদি চেষ্টা করি দুটো সিনেমার গানও লিখতে পারব না! কিছু পয়সা আসত ঘরে।”
যুগ বদলেছে।
কিছুদিন আগে পর্যন্ত কবিতা লিখতে লিখতে কবিরা বড় গল্প, উপন্যাসের দিকে কলম বাড়াতেন। বড় গল্প, উপন্যাসে টাকার পরিমাণ বেশি। জয় গোস্বামী তাঁর একটি বিখ্যাত কবিতায় লিখেছেন, “বাড়ি গিয়ে লিখে ফেলব বড় গল্প উপন্যাসোপম।” এখন বড় গল্প উপন্যাস অতীত। কবিদের কেউ কেউ এখন সিনেমার গান লেখেন। প্রতি গানে নাকি দশ, বিশ, তিরিশ হাজার টাকাও পান।
যুগ বদলেছে।
তবে সাম্প্রদায়িক হানাহানি সে যুগেও ছিল। দুর্ভাগ্যজনক হলেও এযুগেও আছে। সে যুগে সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে রবীন্দ্রনাথের কলম সচল হয়েছিল। পরবর্তীতে নজরুল থেকে শুরু করে অন্নদাশঙ্কর রায় পর্যন্ত সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে কলম ধরেছেন বা কবিতার স্বাভাবিক ধর্ম অনুযায়ী তাঁদের কলম সচল হয়েছে। ১৯৪৬-৪৭ এর দাঙ্গায় জীবানন্দের বিখ্যাত কবিতা ‘১৯৪৬-৪৭’ সাম্প্রদায়িকতার বিরোধিতার, দাঙ্গার ভয়াবহতার এবং লড়াই শেষের শূন্যতার একটি জ্বলন্ত দলিল।
যুগ বদলেছে।
তবু উত্তরপ্রদেশে মরতে হচ্ছে জুনেইদকে আর পশ্চিমবঙ্গে কার্তিককে। কিন্তু ওই যে যুগ বদলেছে। দেশের সাংস্কৃতিক রাজধানী কলকাতায় এমন কিছু কবি, গীতিকার, শিল্পী আছেন যাঁদের বাদুড়িয়া নিয়ে গান রচনার প্রবৃত্তি নেই। কে? কারা?
ক্যাকটাসের সিধুকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল বাদুড়িয়ার ঘটনা আপনাকে কি গান লেখার কথা ভাবাচ্ছে না? সিধুর উত্তর, “এই বিষয় নিয়ে কাব্যি করবো, গান বানাবো বা চারলাইন কবিতা লিখবো এরকম কোনও প্রবৃত্তি নেই আমার। এই ঘটনার ওপর আমার এতটাই ঘৃণা যে আমার সৃষ্টির ওপর তার কোনও প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ প্রভাব পড়ুক আমি চাই না।” একসময় জীবনের গান নামক একপ্রকার ট্রেন্ড বাংলা গানে এসেছিল। মহীনের ঘোড়াগুলির পর প্রতুল মুখোপাধ্যায় ঘুরে সুমন, নচিকেতার হাত ধরে। এঁরা তারই উত্তরসূরী। কোনও এক কারণে মানুষের যন্ত্রণা, বিপন্নতা এঁদের গানের বিষয় হয়ে উঠতে পারছে না। কারণটা কী! বাজার? উত্তর নেই।
আর্বিভাবেই তাঁকে তাঁর মতো থাকতে দেওয়ার আকুতি নিয়ে গানের জগতে এসেছিলেন অনুপম। বাদুড়িয়ার ঘটনার পরেও তিনি নিজের মতোই থাকতে চান।
অনেকদিন আগে জয় গোস্বামী একটি কবিতায় লিখেছিলেন, “দাঁড় করিয়ে রাখে, আমায় ভাঁড় করিয়ে রাখে। ভাঁড়ের মধ্যে পুরবে বলে ভাঁড় করিয়ে রাখে।”
জয় গোস্বামী অবশ্য বাদুড়িয়া কাণ্ডের নিন্দা করেছেন।

 

 

লাইক শেয়ার ও মন্তব্য করুন

বিভিন্ন বিষয়ে ভিডিয়ো পেতে চ্যানেল হিন্দুস্তানের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

Spread the love

Check Also

চোরেদের মন্ত্রীসভা… কেন বলেছিলেন বাঙালিয়ানার প্রতীক

ডঃ অরিন্দম বিশ্বাস : আজ বাংলার এবং বাঙালির রাজনীতির এক মহিরুহ চলে গেলেন। শ্রী বুদ্ধদেব …

আদবানি-সখ্যে সংকোচহীন ছিলেন বুদ্ধ

জয়ন্ত ঘোষাল : লালকৃষ্ণ আদবানির বাড়িতে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য মধ্যাহ্ন ভোজে আসবেন। বাঙালি অতিথির আপ্যায়নে আদবানি-জায়া …

নির্মলার কোনও অর্থনৈতিক চিন্তা-ভাবনা নেই

সুমন ভট্টাচার্য এবারের বাজেটটা না গরিবের না মধ্যবিত্তের না ব্যবসায়ীদের কাউকে খুশি করতে পারলো। দেখে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *