কমলেন্দু সরকার :
সলমন আর দেব, জিতের লড়াই দেখার জন্যে আর দিন পনেরো কী কুড়ি অপেক্ষা করতে হবে। ইদের বাজারে বলিউড বনাম টলিউডের জোর লড়াই। জমে যাবে বাজার। বাজার সিনে বাজার। এবার ইদের মধ্যে মুক্তি পাচ্ছে বলিউডের মেগাস্টার এবং ১০০ কোটি ক্লাবের সভ্য সলমন খানের ‘টিউবলাইট’। এদিকে টলিউডের দুই মেগাস্টার জিৎ এবং দেব-এর ছবিও মুক্তি পাচ্ছে। জিতের ‘বস টু’, দেবের ‘চ্যাম্প’।
ততদিন ‘পোস্ত’ও চলবে আশা করি। এই ছবিটিও কাবাব মে হাড্ডি-র মতো লড়াই দেবে, তেমনটি মনে করছে বক্স-অফিস।
মনে হয়, সলমনকে নিয়ে তেমন চাপে নেই পরিবেশক মহল আর বক্স-অফিস। কেননা, সলমনের দর্শকই আলাদা। তাঁরা সলমনের ছবিতে ভিড় করবেনই। এমনকী সেই সময় শাহরুখ বা আমির কিংবা অক্ষয়ের ছবি রিলিজ করলেও। আমার অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি সলমনের আলাদা একটা বাজার আছে। যেখানে আজ পর্যন্ত কেউই থাবা বসাতে পারেননি, কেউ পারবেন বলে মনেও হয় না। এমনকী বিগ বি-ও পারেননি। ইদের সময় সব সময় হিট দিয়ে গেছেন। যেমন— ২০১৫-য় ‘বজরঙ্গি ভাইজান’ আর ২০১৬-য় ‘সুলতান’।
এখন দেখা যাক, জিৎ এবং দেব কী করেন। সলমনকে যেখানে শেষ করেছি সেখান থেকে শুরু করছি বলিউডের দুই মেগাস্টারের লড়াই। ২০১৫-য় জিতের মুক্তি পেয়েছিল ‘বেশ করেছি প্রেম করেছি’ এবং ২০১৬-য় ‘বাদশা দ্য ডন’। দুটোই ভাল ব্যবসা করেছিল বলে জানা গেছে। অন্যদিকে দেবের ২০১৫-য় কোনও ছবি ছিল না। ২০১৬-য় ছিল ‘কেলোর কীর্তি’। ‘কেলোর কীর্তি’ নাকি বক্স-অফিসে কড়াও নাড়াতে পারেনি। আর কেনই-বা এই ছবির বক্স-অফিসে কড়া নড়বে। এই ছবিটি দেখার পর আমার মনে হয়েছিল কেন দেখলাম! আজও উত্তর পাইনি। অর্থ এবং সময় দুই-ই নষ্ট।
যাই হোক, এখন দেখার জিৎ-দেব-এর লড়াই কেমন জমে! দু’জনের পকেটে প্রচুর দর্শক রয়েছে। আমি দেখেছি জিতের ছবি মুক্তির তাঁর ফ্যানেদের কী উন্মাদনা! দেবের ছবি রিলিজের এমনটা দেখিনি তা নয়। দেখেছি। তবে জিৎ এব্যাপারে যে-কোনও টলিউড হিরোকে পাঁচ গোল দেবেন! তাছাড়া বেশ কয়েক বছর দেখা যাচ্ছে দেব-এর ছবি সেভাবে চলছে না। ফিল্ম সাংবাদিকতার সুবাদে যেভাবে দেখেছিলাম দেবের ক্রেজ, সেই ক্রেজ যেন অনেকটাই অস্তমিত। কেন জানি না!
জিৎ কিন্তু নিজেকে ধরে রেখেছেন। বরং এই প্রতিবেদকের মতে জিৎ নিজের ক্রেজ অনেকাংশে বাড়িয়ে নিয়েছেন। নাহলে ছবি পিছু এক কোটি টাকা নেওয়ার সাহস দেখাতে পারেন! জিতের পারিশ্রমিকের এই পরিমাণ আমার শোনা। জিৎ-ই টলিউডের প্রথম এবং একমাত্র নায়ক যিনি ছবি পিছু এই অঙ্কটি পান।
জিতের যেটি ইদে মুক্তি পাচ্ছে ‘বস টু’, এই ছবির একটি গান নাকি ব্যাপক জনপ্রিয় হয়েছে ইউটিউব-এ। শোনা যাচ্ছে, গানটি নাকি কয়েক লক্ষ জন দেখেছেন!
দেবের ‘চ্যাম্প’ নিয়েও বেশ উৎসাহ রয়েছে তাঁর ফ্যানেদের মধ্যে। এখন থেকেই নাকি ছবিটি দেখার জন্য কোমর বেঁধেছেন! হয়তো দেব এই ছবিতে চমক দেখাতে পারেন।
জিৎ এবং দেব-এর ছবি দু’টি যেন বক্স-অফিস মাত করে। এতে আখেরে বাংলা ছবিরই লাভ। প্রযোজকেরা উৎসাহিত হবেন। আরও চারটে বাংলা ছবি করার জন্য তৈরি হবেন। শোনা যাচ্ছে, ইতিমধ্যে দেবের ‘চ্যাম্প’ নাকি করমুক্ত হয়েই রিলিজ করবে। কেউ কেউ এর মধ্যে অন্য গন্ধ পাচ্ছেন। কেননা, দেব হলেন শাসকদলের সাংসদ। এর মধ্যে অহেতুক রাজনীতি টেনে আনা কেন! আরে বাবা, বাঁচবে তো বাংলা ছবি। সেটাই কম কী! একেই সলমনের ‘টিউবলাইট’ গেঁড়ে বসবে। ইদের বাজারে দর্শকেরা ছবি দেখুন, আনন্দ পান। এর থেকে আর কিই-বা চাওয়ার থাকতে পারে উৎসবের সময়।