নীল বণিক :
কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ সত্ত্বেও নগর দায়রা আদালতে গরহাজির থাকলেন বিমল গুরুং, আশা গুরুং সহ ২১ জন অভিযুক্ত। তাঁদের বিরুদ্ধে তাই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করার আর্জি জানাল সিবিআই। যদিও নগর দায়রা আদালতের মুখ্য বিচারক কুন্দনকুমার কুঁমাই এখনও পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনও নির্দেশ দেননি।
গত বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি নিশীতা মাত্রে এবং বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চ মদন তামাং হত্যা মামলায় অভিযুক্তদের নগর দায়রা আদালতে হাজির থাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
হাইকোর্টের সেই নির্দেশ মেনে আজ নগর দায়রা আদালতের মুখ্য বিচারকের এজলাসে উপস্থিত ছিলেন হরকা বাহাদুর ছেত্রী, ভূপেন্দ্র প্রধান, কেশব রাজ, অরুণ মুক্তান, তেনজিং থাম্বানি শেরপা, গৌতম তামাং, সুরজ সিং, সোনা শেরপা, রঞ্জিত রায়, ভানু রায়, অমল লামা সহ ২৬ জন। কিন্তু, অনুপস্থিত ছিলেন বিমল গুরুং, আশা গুরুং, সন্ধ্যা তামাং, রোশন গিরি, প্রশান্ত ছেত্রী, সুনীল রাই, ববিতা গঙ্গোপাধ্যায়, দিনেশ গুরুং সহ ২১ জন। সিবিআইয়ের আইনজীবী অরুণকুমার ভগত বলেন, “হাইকোর্টের নির্দেশ অগ্রাহ্য করেছেন গুরুংরা। চার্জ গঠনের আগে শুনানির সময় অনুপস্থিত থেকেছেন নগর দায়রা আদালতে। গুরুংদের অনুপস্থিতি নিয়ে এর আগেও সিবিআই বারবার সরব হয়েছে। অথচ নিম্ন আদালত মামলার রায়ে তাদের বক্তব্য রেকর্ড করেনি। এর ফলে হাইকোর্ট সিবিআইয়ের তৎপরতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। প্রথমে অভিযুক্তদের ফোনও করা হয়। তাতেও যোগাযোগ করা সম্ভব না হলে বাড়িতে খুঁজতে যায় সিবিআই। সেখানেও সন্ধান পাওয়া যায়নি তাঁদের। দিল্লির ঠিকানাতে খোঁজ করেও লাভ হয়নি। পরে হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে সিবিআই পাহাড়ে বিমল গুরুং সহ সমস্ত অভিযুক্তের বাড়ির দেওয়ালে নিম্ন আদালতে আজ হাজির থাকার আইনি নোটিস দেয়। তারপরেও আজ যাঁরা অনুপস্থিত রয়েছেন তাঁদের বিরুদ্ধে আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করুক।”
অন্যদিকে, মুখ্য বিচারকের এজলাস থেকে মামলা সরানোর বিষয় নিয়ে অভিযুক্তদের আইনজীবী দেবাশিস রায় বলেন, মদন তামাংয়ের স্ত্রী ভারতী তামাংয়ের পক্ষ থেকে সুপ্রিম কোর্টে যে আবেদন করা হয়েছে তাতে মুখ্য বিচারকের এজলাস থেকে মামলা সরানোর কথাই উল্লেখ রয়েছে !
যদিও ভারতী তামাং-এর আইনজীবী অর্ণব মুখোপাধ্যায় বলেন, “নিম্ন আদালতের মুখ্য বিচারক কুন্দনকুমার কুঁমাই কার্শিয়ঙের বাসিন্দা হওয়ায় তাঁর এজলাস থেকে মামলা সরানোর কোনও আর্জি জানাইনি। বরং আমরা এই মামলাটির দ্রুত শুনানির জন্য সুপ্রিম কোর্টের কাছে আবেদন জানিয়েছি।”
বিমল গুরুং সহ ২১ জন অভিযুক্ত আজ হাজির না হলেও আদালতে এসেছিলেন জন আন্দোলন পার্টির নেতা হরকা বাহাদুর ছেত্রী। আদালত থেকে বের হওয়ার পর তিনি বলেন, “আদালতের নির্দেশ মেনে এখানে এসেছি। আজ কলকাতায় থাকব। আগামীকালও আদালতে হাজিরা আছে।” তবে বিমল গুরুংদের অনুপস্থিত থাকা প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে বিষয়টি এড়িয়ে যান তিনি। বলেন, “এই বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারব না।”
পাহাড়ের গোলমাল নিয়েও তাঁর জবাব, “ওখানে একটা গোষ্ঠী গন্ডগোল লাগানোর কাজ করছে। তবে আমি কখনও বলতে পারি না যে গুরুংরা গোলমাল পাকাচ্ছেন।”
