নীল রায়:
এবার পাল্টা চাপ দিল বিধান ভবন! মঙ্গলবার বিকেলে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে সাংবাদিক সম্মেলন করে জোট নিয়ে রাজ্য কংগ্রেসকে ২৪ ঘণ্টা সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন বিমান বসু। তারই পাল্টা হুঙ্কার ছাড়লেন বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য।
উল্লেখ্য, বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু জানিয়েছিলেন, আপাতত কংগ্রেসের জেতা চারটি আসনে প্রার্থী দেবে না বামেরা। ২৪ ঘন্টার মধ্যে রাজ্য কংগ্রেস তাদের সিদ্ধান্ত না জানালে ওই আসনগুলোতে প্রার্থী দেবে তারা। বুধবার বিধান ভবনে সাংবাদিক সম্মেলনে বিমান বসুর পাল্টা কৌশলে জবাব দিলেন রাজ্যসভার সংসদ সদস্য প্রদীপ ভট্টাচার্য। জানিয়ে দিলেন, বোলপুর , ডায়মণ্ডহারবার, আসানসোল, তমলুক সহ বিষ্ণুপুরে প্রার্থী দেবে না কংগ্রেস। এমন ঘোষণার পর প্রশ্ন ওঠে তাহলে কি জোট আলোচনা আবার শুরু হচ্ছে? উত্তরে প্রদীপ বলেন, “জোট আলোচনা আর সম্ভব নয়।” তবে প্রদীপ ভট্টাচার্য আরও বলেন, “আমরা রাজনৈতিক সৌজন্যে বিশ্বাসী। তাই কাল বিকেল ৪ টে অবধি টাইম দিলাম। পাঁচটি আসনে আমরা প্রার্থী দেব না। এটা জানিয়ে দিলাম।” তিনি বলেন, “আমরা সার্বিক জোট চেয়েছিলাম। কিন্তু সিপিএম আসন সমঝোতা করে আমাদের অচ্ছুৎ রাখতে চাইল। যৌথ প্রচার ও দীর্ঘ মেয়াদী জোট করা হলে তা রাজ্যের মানুষের কাছে অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য হতো বলে আমাদের মনে হয়েছিল।”
প্রসঙ্গত, রাজনৈতিক মহলের ধারণা আজকের সাংবাদিক সম্মেলন করে জোট ভাঙার দায় সিপিএমের ওপর চাপাতে চাইল কংগ্রেস। কারণ, বামেদের ২৪ ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার পর প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র সেই প্রস্তাব সযত্নে ফিরিয়েছিলেন। কিন্তু তার পরবর্তী সময় প্রদেশ কংগ্রেস নেতাদের অভ্যন্তরীণ আলোচনায় নির্যাসে উঠে আসে— এমন কৌশল নিলে জোট ভাঙার দায় রাজ্য কংগ্রেসের ওপর বর্তাতে পারে। তাই ঠিক করা হয় সিপিএম যেমন কংগ্রেসের হাতে থাকা চারটি আসনে প্রার্থী দিচ্ছে না। তেমনি সিপিএমের পাঁচ জন প্রার্থীর বিরুদ্ধে কংগ্রেস প্রতিদ্বন্দী দেবে না। যদিও সিপিএমের দাবি ছিল, রায়গঞ্জ ও মুর্শিদাবাদে তাদের সাংসদের বিরুদ্ধে প্রার্থী না দিক কংগ্রেস। রাহুল গাঁধীর নির্দেশেই ২ আসনের প্রথমে প্রার্থী না দিলেও জোট ভেঙে যাওয়ার পর প্রথমেই রায়গঞ্জে দীপা দাশমুন্সি ও মুর্শিদাবাদে আবু হেনা কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছেন। যা নিয়ে বেজায় ক্ষিপ্ত মুজাফফর আহমেদ ভবন। অন্যদিকে ৫ আসন ছাড়া নিয়ে সিপিএম-এর একাংশের যুক্তি, জোট ভাঙার দায় সিপিএমের ওপর চাপাতে প্রদেশ কংগ্রেস এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ওদের আগে জবাব দেওয়া উচিত, কেন বদরুদ্দোজা খান ও মোহাম্মদ সেলিমের বিরুদ্ধে প্রার্থী দিলেন কংগ্রেস নেতারা? তাদের আরও প্রশ্ন, কি কারণে বামেদের পাঁচটি হারা আসনে প্রার্থী দিচ্ছে না কংগ্রেস? পাঁচটি আসনের প্রার্থী না দেওয়ার আবেদন তো আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের পক্ষ থেকে বিধান ভবনকে কখনোই জানানো হয়নি!