নীল বণিক :
সেনাবাহিনীর প্রাক্তন সদস্যরাই একদিন জিএলপি-র সদস্যদের অস্ত্র প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন, এমনটাই উঠে আসছে গোয়েন্দা রিপোর্টে। চাঞ্চল্যকর এই তথ্য গোয়েন্দাদের হাতে আসার পর থেকেই নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। তবে প্রশ্ন একটাই গেরিলা প্রশিক্ষণের সমাপ্তিকরণের পর আদৌ কী রোখা যাবে এই জিএলপিকে!
আজ নয়, সুবাস ঘিসিংয়ের আমল থেকেই জিএলপির পথ চলা শুরু। পাহাড়ের স্বঘোষিত প্রশাসকদের হাত ধরেই মাথা চাড়া দিয়েছিল জিএলপি। জিএলপি তাহলে কি? সুবাস ঘিসিংদের পাহারা দেওয়া এবং নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য তৈরি হয়েছিল এই বাহিনী। জানা গেছে, এই বাহিনীর রাত্রিবেলা পাহাড়ের বিভিন্ন পয়েন্টে পাহারাতে মোতায়েনও থাকত।
পুলিশের সন্দেহ সেনাবাহিনীর প্রাক্তন জওয়ান বা তার থেকেও উচ্চপদ মর্যাদার আধিকারিকরা কেন এই প্রশিক্ষণ দিলেন। কে বা কারা এই প্রশিক্ষণ দেওয়াতে উদ্বুদ্ধ করল তাঁদের। প্রশিক্ষণ দিতে কত টাকাই বা পেয়েছিলেন তাঁরা? কে জুগিয়েছিল সেই অর্থ? গোয়েন্দাদের মাথায় এখন এই প্রশ্নই নড়েচড়ে বেড়াচ্ছে।
গোয়েন্দাদের দাবি, পুলিশের ওপর হামলার পিছনে রয়েছে গোর্খাল্যান্ড পার্সোনেল। বিমল গুরুঙ্গের নিজের হাতে তৈরি এই সংগঠনের সদস্যদের সন্ধানে নেমেছে পুলিশ। কিন্তু কারা এই দলে রয়েছে তা কী আগে জানতো না রাজ্য পুলিশের ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চ!
২০০৭-এ তৈরি হয় গোর্খাল্যান্ড পার্সোনেল বা জিএলপি। বর্তমানে এই সংগঠনের সদস্য সংখ্যা প্রায় ছ’হাজার। শুরুর দিকে অবশ্য এই সংগঠনের নাম ছিল গোর্খাল্যান্ড পুলিশ। সেই সংগঠনে নাম লেখান মোর্চার যুব নেতারা। মোর্চা নেতারা একটা সময় বুঝিয়ে ছিলেন আলাদা রাজ্য হলেই সকলকে পুলিশে চাকরি দেওয়া হবে।
একসময় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই জিএলপির কাছ থেকেই নিয়েছিলেন গান স্যালুট। তখন কী করছিল কেন্দ্রীয় সরকারের মিনিস্ট্রি অফ হোম অ্যাফেয়ার্স! আর কীই বা করছিল রাজ্য পুলিশ তা নিয়েই এখন উঠছে নানান ধরনের বিতর্কিত প্রশ্ন।
সম্প্রতি পাহাড়ে গণ্ডগোলের সময় পুলিশের ওপর এরাই মূলত হামলা চালায় বলে মনে করছে পুলিশের বিভিন্ন মহল। গত কয়েকদিনের পাওয়া ভিডিয়ো ফুটেজ দেখে বেশ কয়েকজনকে চিহ্নিত করেছে পুলিশ। তাদের সম্পর্কে খোঁজ নিতে গিয়ে এমন তথ্য হাতে পান গোয়েন্দারা।
তবে দুঁদে গোয়েন্দাদের কপালে ভাঁজ ফেলেছে আরও একটি বিষয়। এমনকী সেনাবাহিনীর সেই প্রাক্তন আধিকারীকদেরও খুঁজছে পুলিশ। গোয়েন্দাদের মতে জিএলপির সদস্যদের নিজেদের হেফাজতে না নিতে পারলে পাহাড়ে হিংসা থামানো মোটেও সম্ভব নয়। তাই আপাতত রাজ্য পুলিশের দুঁদে গোয়েন্দারা এই সংগঠনের কয়েকজন মাথাকে নিজেদের হেফাজতে নিতে বদ্ধ পরিকর।
লাইক ও শেয়ার করুন