নীল বণিক
কোনও এক সময় স্কুলে মাষ্টারমশাইরা রাম বকুনি দিতেন। আর সেই ঝোড়ো বকুনির সামনে এক প্রকার অবর্ণনীয় মুখ করে দাঁড়িয়ে থাকত ছাত্ররা। সেইসব ছাত্রের মুখভঙ্গির তুলনা অনেকদিন পর খুঁজে পাওয়া গেল বীরভুমে। সৌজন্যে অনুব্রত মণ্ডল। তাঁর ধমকের সামনে কর্তব্যরত পুলিশ অফিসারের যে শরীরী ভাষা মানুষ দেখেছেন, তার সঙ্গে বেদম বকুনি খাওয়া ছাত্রের মিল পাচ্ছেন অনেকেই।
তবে সব রাজনীতিক যেমন এক নয় তেমন সব পুলিশও এক প্রকার হয় না। সিনেমার সিংঘম বাস্তবেও জন্মায়। তবে সিনেমার মতই তাঁদের জীবনটাও দুর্বিষহ করে দেন রাজনীতির কারবারীরা।
অজয় দেবগনের সিঙ্ঘম ছবিটি সহজে ভোলার নয়। ওই ছবিতে দেখা গিয়েছিল গোয়ার এক রাজনীতিক জয়কান্ত শিকড়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গিয়ে হয়রান হতে হয়েছিল পুলিশ অফিসার বাজিরাও সিঙ্ঘমকে। সিনেমায় সিঙ্ঘমের মত পুলিশে অফিসার দেখে অনেকেই আক্ষেপ করেন, হায়রে যদি সত্যি এমন হত! বাস্তবেও হয় বৈকি! অবশ্যই হয়। ‘অনুব্রতর বীরভুমেই’ আছেন এমনই এক সিংঘম। বর্তমানে তিনি বীরভূমের সিউড়ি থানায কর্তব্যরত। নাম সৌমেন দত্ত । ওসি দুবরাজপুর থাকার সময় একাধিকবার বীরভূমের বেতাজ বাদশা অনুব্রত মণ্ডলের অযাচিত কর্তৃত্ব মানতে চাননি। নিজের মত করে দুবরাজপুরের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করতে চেয়েছিলেন। এমনকি দুবরাজপুরের কয়লা মাফিয়ারা সৌমেন দওর নাম শুনলে একঘটি জল খেয়ে বলতেন, ‘এটা কবে যাবে!’ বুকের পাটা নিয়ে দুবরাজপুরে অনুব্রতর সাঙ্গপাঙ্গদের সামলেও নিয়েছিলেন তিনি। তবে তার ‘পুরস্কার রুপে’ সেখান থেকে তাঁকে চলে যেতে হয়েছিল লাভপুর থানাতে। এই থানাতে তাঁকে সামলাতে হয় লাভপুরের তৃণমূল বিধায়ক মণিরুল ইসলামের সাগরেদদের। খবরের কাগজ আর টিভি চ্যানেলের দৌলতে মণিরুল ইসলামের ‘জ্বালাময়ি’ বক্তৃতা শোনেননি এমন মানুষ পাওয়া দুষ্কর। তবে সেখানেও বেশি দিন থাকতে পারেননি সৌমেন দত্ত। এরপর তাঁকে একেবারেই ওসির পদ থেকে সরিয়ে দিয়ে থানাতে একজন সাধারন পুলিশ অফিসারের ভূমিকা পালনের দায়িত্ব দেওয়া হয়। বীরভূমের বাইশটি থানার ওসিরা যখন সৌমেনের পরিণতির কথা মনে করেন , তখন তাদের সব কর্তব্য ভুলে যান।
তবে নিচু তলার কর্মীরা মনে করেন সিংঘম আবার ফিরবেন!
কারণ, সিংঘম রিটার্নস!
বিভিন্ন বিষয়ে ভিডিয়ো পেতে চ্যানেল হিন্দুস্তানের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
https://www.youtube.com/channelhindustan
https://www.facebook.com/channelhindustan