নীল রায়:
১৮০ ডিগ্রি ভোলবদল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা নেতা ‘থুড়ি’ দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী অমর সিংহ রাইয়ের। শনিবার বিধানসভা ভবনে দার্জিলিং বিধানসভা থেকে পদত্যাগের পত্র জমা দিতে এসেছিলেন তিনি। স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার পর সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন অমর। তাঁকে প্রশ্ন করা হয় জিতলে আপনি কি সংসদে গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে সরব হবেন? উত্তরে অমর সিংহ রাই বলেন, ‘আমি গোর্খা সম্প্রদায়ের স্বীকৃতির দাবিতে সরব হব। কারণ পাহাড়ে গোর্খা জনগোষ্ঠীর মানুষের জমির অধিকার নেই। আরও এমন অনেক দাবি যেগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আগে আমাকে সেই দাবিগুলো নিয়ে সরব হতে হবে।’ এমন কথা বললেও, একটি বারের জন্যও গোর্খাল্যান্ডের দাবি নিয়ে শব্দ ব্যয় করেননি অমর। কার্যত গোর্খাল্যান্ড প্রসঙ্গ এড়িয়ে গিয়েছেন মোর্চা নেতা।
বস্তুত ২০১৬ সালে যখন মোর্চা সুপ্রিমো বিমল গুরুং দার্জিলিং বিধানসভায় অমর সিংহ রাইকে প্রার্থী করেছিলেন, তখনও গোর্খাল্যান্ডের দাবিই ছিল তাঁর প্রধান রাজনৈতিক কার্যক্রম। এমনকি নির্বাচিত হওয়ার পরেও গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে বিধানসভা বয়কট করার নজির রয়েছে তাঁর। কিন্তু, বিমল গুরুং পাহাড় ছাড়া হওয়ার পর বিনয় তামাংয়ের হাত ধরে তৃণমূলের সঙ্গে পথ চলা শুরু করেন মোর্চার তিন বিধায়ক। সেই পথ ধরেই এবার দার্জিলিং লোকসভায় প্রার্থী হয়েছেন অমর সিং রাই। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের নীতি মেনেই এখন গোর্খাল্যান্ডের দাবি থেকে সরে এসেছেন অমর। যা তাঁর আগের অবস্থান থেকে ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে যাওয়ার শামিল।
কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, পাহাড়ের গোর্খা জনগোষ্ঠীর মানুষ যাঁরা গোর্খাল্যান্ডকেই নিজেদের অধিকার বলে মনে করেন, তারা কি অমর সিংহ রাইয়ের এমন রাজনৈতিক অবস্থান মেনে নেবেন? প্রায় ১১০ বছরের স্বপ্ন চোখে নিয়ে কি ভোট দেবেন আদৌ বাংলার শাসন ক্ষমতায় থাকা রাজনৈতিক দলকে?