Breaking News
Home / TRENDING / অ্যাডভান্টেজ গেরুয়া শিবির ব্যাকফুটে কংগ্রেস

অ্যাডভান্টেজ গেরুয়া শিবির ব্যাকফুটে কংগ্রেস

পার্লামেন্ট স্ট্রিট :

সুমন ভট্টাচার্য     :

 

দিল্লির বাতাসে এখন যুদ্ধের গন্ধ। প্রায় ২০ বছর আগের কার্গিল যুদ্ধের স্মৃতিকে উসকে দিয়ে সীমান্তে তৎপরতা বাড়াচ্ছে ভারত-পাকিস্তান দু’পক্ষই। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে জাতীয়তাবাদকে উসকে নিজেদের আরও কিছুটা এগিয়ে নিতে চাইছে বিজেপি। মোদী-র আমলেই ভারত ‘সার্জিকাল স্ট্রাইক’ করতে পেরেছে ইত্যাদি। অমিত শাহ জানেন, কার্গিল বাজপেয়ীকে দ্বিতীয়বার দিল্লির মসনদ পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছিল। অতএব মোদীর দ্বিতীয়বার কুর্সি দখলের জন্য ‘জাতীয়তাবাদ’ এবং পাকিস্তানের বিরুদ্ধে রণংদেহী মনোভাব ‘ট্রাম্পকার্ড’ হতে পারে। উত্তর প্রদেশের নির্বাচনে বিপুল জয়ের পর থেকেই বিজেপি এমনিতেই চাঙ্গা। তার ওপরে সীমান্তে উত্তেজনা গেরুয়া শিবির-এর জাতীয়তাবাদের পালে বাড়তি হাওয়া দিয়ে দিয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে স্বভাবতই বিপাকে কংগ্রেস। সেনাবাহিনীর তৎপরতা নিয়ে কিছু বলতে গেলেই গায়ে ‘দেশবিরোধী’-র তকমা লেগে যেতে পারে, এই আশঙ্কায় প্রমাদ গুণছেন কংগ্রেসের নেতারা। কাশ্মীর নিয়ে মোদী সরকার ‘ব্যর্থ’, এই কথাটাও সাহস করে বলতে পারছেন না কংগ্রেসের হেভিওয়েটরা। কারণ, কংগ্রেসের একটা বড় অংশ, বীরাপ্পান মইলি, কমলনাথের মতো নেতারা মনে করেন কংগ্রেস শুধু ‘মুসলমানদের বন্ধু’, এই ভাবমূর্তি আদতে দলের ক্ষতি করছে। এবং মেরুকরণের মাধ্যমে বিজেপি তার ফয়দা তুলেছে। তাই কংগ্রেসকে ‘সংখ্যালঘু’ ঘোষণার মতো নীতি এবার বর্জন করতে হবে। এই পরিস্থিতিতে মণিশঙ্কর আইয়ার, দিগ্বীজয় সিংহের মতো নেতারা কংগ্রেসে কিছুটা কোণঠাসা। কেউই কাশ্মীর কিংবা ভারত-পাক সীমান্ত নিয়ে মুখ খুলছেন না। বরং সদ্য পাঞ্জাব নির্বাচনে জিতে আসা ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং তো এগিয়ে এসে সেনাবাহিনীর যাবতীয় সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছেন, বিশেষ করে কাশ্মীরে সেনাবাহিনীর যাবতীয় সিদ্ধান্তকে।

অতএব, শুধু রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নয়, কাশ্মীর কিংবা সীমান্ত উত্তেজনা নিয়েও আপাতত অ্যাডভান্টেজ বিজেপি, এবং ব্যাকফুটে কংগ্রেস। রাহুল গান্ধীকে অবশ্য এইসব সংকটের সময় বিশেষ দেখা যায় না। আর মিডিয়া-র মুথোমুখি হওয়ার ‘বদভ্যাস’ তাঁর একদম নেই। বিবিএম বা ‘ব্ল্যাকবেরি ম্যাসেঞ্জার’-এর মাধ্যমে যিনি শতাব্দী প্রাচীন কংগ্রেস দলকে চালাবেন বলে মনে করেন, সেই রাজীবতনয়ের কাছ থেকে এর চাইতে বেশি কিছু প্রত্যাশা করাই উচিত নয়। কিন্তু তাহলে কংগ্রেস-এর কী হবে? নরেন্দ্র মোদীর মতো ‘ফুলটাইম পলিটিশিয়ান’-এর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে এমনিতেই রাহুল গাঁধীর মতো অনিচ্ছুক এবং ‘পার্টটাইম পলিটিশিয়ান’কে নিয়ে কংগ্রেস বেকায়দায়। রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে অনেক হাত-পা ছোড়াছুড়ির পরেও কিছু হচ্ছে না। অনেক নাম, অনেক প্রস্তাব-কিন্তু কোনওটাই গেরুয়া শিবিরের সামনে দাঁড় করানো যাচ্ছে না। সংখ্যায় অনেক এগিয়ে থাকা মোদী শিবির নিশ্চিত, রাইসিনা হিলসে এবার তাদের লোকই বসবে। সেইজন্যই গেরুয়া শিবির কোনও নাম নিয়ে উচ্চবাচ্য করছে না। তার মধ্যে সীমান্তে উত্তেজনা আরও ব্যাকফুটে ঠেলে দিচ্ছে কংগ্রেসকে।

Spread the love

Check Also

চোরেদের মন্ত্রীসভা… কেন বলেছিলেন বাঙালিয়ানার প্রতীক

ডঃ অরিন্দম বিশ্বাস : আজ বাংলার এবং বাঙালির রাজনীতির এক মহিরুহ চলে গেলেন। শ্রী বুদ্ধদেব …

আদবানি-সখ্যে সংকোচহীন ছিলেন বুদ্ধ

জয়ন্ত ঘোষাল : লালকৃষ্ণ আদবানির বাড়িতে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য মধ্যাহ্ন ভোজে আসবেন। বাঙালি অতিথির আপ্যায়নে আদবানি-জায়া …

নির্মলার কোনও অর্থনৈতিক চিন্তা-ভাবনা নেই

সুমন ভট্টাচার্য এবারের বাজেটটা না গরিবের না মধ্যবিত্তের না ব্যবসায়ীদের কাউকে খুশি করতে পারলো। দেখে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *