Home / TRENDING / শ্রীকান্ত, সিবিআই ও শাঁখের করাত

শ্রীকান্ত, সিবিআই ও শাঁখের করাত

তরুণ সেন

বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির সবচেয়ে বড় দুই জেরক্স সেন্টার ভেঙ্কটেশ ফিল্মস ও এসকে মুভিজের মধ্যে ক’দিন বেশ ঠাণ্ডা যুদ্ধ চলেছিল বাংলাদেশের হিরো শাকিব খানকে নিয়ে। বাংলাদেশ থেকে হিরো এবং হিরোইন আমদানিতে এক নম্বরে এসকে। তারা বাংলাদেশের বাণিজ্যিক ছবির এক নম্বর হিরো শাকিব খানকে নিয়ে ক’বছর হল ছবি করতে শুরু করেছিল এবং এপার ওপার দুই বাংলার বাজার ধরে নিতে পেরেছিল। গত বছরের জুলাই অব্দিও রমরমিয়ে রিলিজ হয়েছে এসকে থেকে ‘নবাব’ ও ‘চালবাজ’। কিন্তু সেপ্টেম্বরে রিলিজ করল এসভিএফের ‘নাকাব’। নায়ক সেই শাকিব। এটা রিলিজ করার পরই এসকের সঙ্গে সম্পর্ক চুকিয়ে ফেলতে শাকিব নাকি অসম্ভব রকমের মোটা টাকা চাইতে লাগলেন, কানাঘুষোয় শোনা যাচ্ছিল ভেঙ্কটেশ নাকি শাকিবকে এগ্রিমেন্টে বেঁধে ফেলেছে এবং শ্রীকান্তর ইশারাতেই তিনি নাচছিলেন। এর ফল যা হওয়ার হল, রাজায় রাজায় যুদ্ধ হল, উলুখাগড়ার প্রাণ গেল!

শ্রীকান্তর গ্রেপ্তার পরবর্তী বিবৃতিতে ভেঙ্কটেশ ও তৃণমূলের বক্তব্য একটা বিন্দুতে গিয়ে শেষ হয়, যেখানে তৃণমূল ও বিজেপি’র রাজনৈতিক দ্বন্দ্বে নাকি উলুখাগড়া শ্রীকান্ত! যেন ২৪ বা ২৫ কোটিটা কোনও ব্যাপার নয়, পোর্ট ট্রাস্টের জমিটাও কিছু নয়, লেক মল — সেটাও নেহাত একটা ছাপোষা বিষয় যেন তাঁদের কাছে! কিন্তু, তবু ভয় আছে, উলুখাগড়ার গোড়ায় কেঁচো খুঁড়তে কেউটে না বেরিয়ে পড়ে!

সিবিআই বেশ আটঘাট বেঁধেই শ্রীকান্তকে ধরেছে এবং শ্রীকান্তও বেশ আটঘাট বেঁধে ধরা দিয়েছেন। ধরার বেশ কয়েকদিন আগে থেকে শ্রীকান্তকে সিবিআইয়ের ফলো করা এবং গাড়ি ও গাড়ির নম্বর চেঞ্জ করে সিবিআইযের চোখে শ্রীকান্তর ধুলো দেওয়ার ঘটনা থেকে প্রমাণিত হয় যে, দুপক্ষই বেশ জোরদার, দুপক্ষের কাছেই একে অন্যের খবর থাকত, ফলে , দুপক্ষের মানসিক প্রস্তুতি চূড়ান্ত পর্যায়ে ছিল। শ্রীকান্ত চোখের সামনে দেখেছেন মদন মিত্র, কুণাল ঘোষ, সুদীপ্ত সেন, তাপস পাল, সুদীপ বন্দোপাধ্যাযের গ্রেফতারি। তাই ভেবেছিলেন নিজেকে শক্ত রেখে সমস্ত কিছু অস্বীকার করলে তাঁকে কিছুতেই ভাঙতে পারবে না সিবিআই। ধরা পড়ার মুহূর্তে তাই সেই চেষ্টাই তিনি করেছিলেন। তারপর আদালতে তাঁকে হেফাজতে নেওয়ার ব্যাপারে সিবিআই খুব একটা আগ্রাসী না হওয়ায় শাসকদলের মধ্যে এই অস্বস্তি শুরু হয়েছে যে, সাইকোলজিক্যাল গেমে শ্রীকান্ত নিশ্চয় হার মেনেছেন!

সিবিআই-এর কাছে আত্মসমর্পণ না-করলেও শ্রীকান্তর কাছে এখনও সেই দুটোই রাস্তা। কোনও রকমে দাঁতে দাঁত চেপে পড়ে থাকা, নয়তো সব কিছু উগরে দেওয়া। কারণ, একবার যখন সিবিআই ধরেছে, তখন সবকিছু জেনেই তাঁকে ছাড়বে, তার আগে নয়। কিন্তু একবার সব উগরে দিলে এ রাজ্যে তাঁর সাম্রাজ্য ডকে উঠবে। আর আত্মসমর্পণ করলে, একটাই রাস্তা– সব উগরে দিলেই আপাতত ছাড়া পাবে, ছাড়া পেলেই সুযোগ বুঝে ঝোপ বুঝে আবার কোপ মারার সম্ভাবনা!

Spread the love

Check Also

কেমন হলো, মুখ্যমন্ত্রীর এপিসোডের প্রথম ঝলক ?

সুচরিতা সেন, বিনোদন ডেস্ক রোজ বিকেলে বাংলার প্রতিটি ঘরে বিনোদন শুরু হয় এই শো এর …

বছর শুরুতে শিব দরবারে মিমি

চ্যানেল হিন্দুস্তান, বিনোদন ডেক্স বর্তমানে বেনারস ভ্রমণে ব্যস্ত টলিউড নায়িকা। সেখানকার অলি-গলিতে ঘুরছেন। সদ্য ওটিটি …

রশিদ খানের ফিরে দেখা জীবনধ্যায়

বিনোদন ডেস্ক, সুচরিতা সেন, আবার নক্ষত্রপতন, না ফেরার দেশে চলে গেলেন ওস্তাদ রশিদ খান। গানের …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *