রঙ্গীত মিত্র
পরিত্যক্ত পুকুর
——————–
ভাঙা পাঁচিলের পিছনের অতীত
মধ্যরাতে বাদুড়ের সঙ্গে কথা বলে।
বাস্তুসাপ মেপে নেয় ছায়ার দূরত্ব
যদিও ছায়ার কোনও রং থাকে না।
শুধু হারিয়ে যাওয়া
কোনও নির্বোধ হাত
তাকে ঠেলে ফেলে দিয়েছিল, পুকুরে।
এখনো কান পাতলে আর্তনাদ শোনা যায়
বড় দেরি হয়ে গিয়েছিল।
পরিত্যক্ত পুকুর থেকে
শিশুর পায়ের ছাপ দালান পর্যন্ত যায়।
ডিটেনশান ক্যাম্প
———————-
নিঃশব্দে কাউন্ট-ড্রাকুলা ঘুরে যান
টালিগঞ্জের কবরে।
বাড়ি ফেরার সময় আর বাড়ি থেকে বেরোনোর সময়
ইচ্ছেরা ঘুরে বেড়ায় মেট্রোর সামনে।
মন্দির-মসজিদের ছায়া পড়ে জলে
এখানে কোনও গির্জা নেই।
কবর আছে। কবরের নিচে আমার পূর্বজন্ম
ক্ষোভ, অতৃপ্তির স্বস্তিকা-চিহ্ন।
আত্মত্যাগ মানে বদলিয়ে
ডিটেনশান ক্যাম্প হয়ে গেছে।
দামোদর
————————–
রহস্য আর ছলনার হ্যাজাকের আলোয়
বেজে ওঠে বাইজিপাড়া।
এ যেন নবাব ওয়াজিদ আলির ‘হুসনে আখতার’
ভোরের আজান মিশে যায় গীতার পাতায়। আমি
দাদুকে দেখেছি, বাইবেল অনুবাদ করতে।
অতীত উচ্চারণ করতে করতে
বন্ধ ঊষা-মার্টিনের কারখানা ধর্মস্থান হয়ে ওঠে।
সেই সাউথসিটিতে আপনি সবই পাবেন,
শুধু আরশিনগরের নাম বদলে গিয়ে
দামোদর হয়ে গিয়েছে।
দামোদর ব্যাপারটা কেমন সভ্যতা বিরুদ্ধ!
রঙ্গীত মিত্র:
অন্যরকম মানুষ। তিনি আলো প্রেমিক। আলো মানেই নারী। নারী, পরিবেশ এবং সমাজ নিয়ে পাথরে লিখে যান হারিয়ে যাওয়া নদী। এ পর্যন্ত, “রুমালে বিয়ারের গন্ধ”, “ভালোপাগলের আস্তানা” এবং “কলম্বাসের লোডিংস্টোন” এই তিনটি বই ছাড়াও ছড়িয়ে রয়েছে বিভিন্ন লেখা। রঙ্গীতের জন্ম কলকাতায় আর কর্মস্থান প্রত্যন্ত গ্রাম। মৌলবাদ, দালালি এবং হিপক্রেসির বিপরীতে গিয়ে তিনি একটা প্রকাণ্ড স্বপ্ন-যাপন করতে চান যেখানে আছে এবং নেই দুটোই বিদ্যমান। পড়াশুনোর ডিগ্রি ঘেঁটে আপাতত তিনি পরিবেশ এবং সমাজ নিয়ে হারিয়েছেন রাস্তা। অতএব অনেকদিনের নির্জনতা ও রাজনীতি পেরিয়ে, এবার পিট সিগারে মন দিয়েছেন।
অনেকদিন পর তোমার কিছু লেখা পড়তে পারলাম। খুব ভালো লাগলো।