ঈষাণিকা ভোরাই:
“মুঙ্গেরীলালকো গুস্যা কিঁউ আতা হ্যায়”। এটা জানার জন্য সিনেমাটা দেখতে হবে। আর মমতা ব্যানার্জি কো গুস্যা কিঁউ আতা হ্যায় জানার জন্য দেখতে হবে প্রশাসনিক মূল্যায়ন বৈঠক। ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পর দু’বছরের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন ৯৫% কাজ হয়ে গেছে। উন্নয়নের রথ গড়গড়িয়ে চালিয়ে ২০১৬ সালে দ্বিতীয়বারের জন্য আবার ক্ষমতায় আসেন তিনি। যে দ্রুতগতিতে সরকার উন্নয়নের কাজ করে চলেছে তাতে আর কোন কাজ বাকি নেই। জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ২০১৭ ডিসেম্বর মাসে নবান্ন সভাঘরে স্টেট লেভেল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ রিভিউ মিটিং-এ মুখ্যমন্ত্রী বলেওছিলেন সব কাজ শেষ। সেই মূল্যায়ন বৈঠকেই মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে এ-প্লাস গ্রেড পেয়েছিলেন অরূপ বিশ্বাস,সুব্রত মুখোপাধ্যায়, রাজীব ব্যানার্জী,অমিত মিত্র,ফিরহাদ হাকিম,পার্থ চট্টোপাধ্যায়রা। কিন্তু কি এমন হলো যে মাত্র তিন মাসের মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী কে ধমক দিতে হচ্ছে বিভিন্ন দপ্তরের সচিবদের কে। এখানেই উঠে আসছে পঞ্চায়েত ভোটের তথ্য। মুখে যতই ১০০% কাজের ফিরিস্তি দিন না কেন, পঞ্চায়েত ভোটের আগে মুখ্যমন্ত্রী বেশ বুঝতে পারছেন সবকিছু ঠিকঠাক চলছে না। এমনিতে এত প্রকল্প শুরু করেছে মমতার সরকার তাতে চিন্তার কিছু ছিল না। কিন্তু প্রকল্পের সুবিধা কি সবার কাছে ঠিকমত পৌঁছাচ্ছে না। তাই কি অসন্তোষ বাড়ছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। আর তার বহিঃপ্রকাশ ঘটছে মুখ্যমন্ত্রীর তিরস্কারের মধ্য দিয়ে! বোলপুরের প্রশাসনিক বৈঠকে সবার সামনে টিভি ক্যামেরার উপস্থিতিতেই মুখ্যমন্ত্রীর কড়া ধমক খেলেন প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তরের প্রধান সচিব। একদিন পরই বৃহস্পতিবার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার প্রশাসনিক বৈঠকে সেই টিভি ক্যামেরার সামনে ধমক খেলেন গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের প্রধান সচিব সৌরভ দাস। ইদানিং মুখ্যমন্ত্রীর রোষের হাত থেকে বাদ যাচ্ছেন না নেতা-মন্ত্রী থেকে শুরু করে দলের অন্যান্য জনপ্রতিনিধিরাও। তৃণমূলের কোর কমিটির বৈঠক বা প্রশাসনিক মূল্যায়ন বৈঠক, মুখ্যমন্ত্রী এখন প্রায় প্রতিটা জায়গাতেই নিয়ম করে একটা কথা বলছেন; সেটা হলো, সংরক্ষনের কারণে যারা বাদ যাবে তাদের সরকার অন্যভাবে কাজে লাগাবে। বিরোধীদের মতে, সব কিছু জেনে বুঝেই মুখ্যমন্ত্রী এই কাজগুলো করছেন। টিভি ক্যামেরার সামনে প্রশাসনিক আধিকারিকদের বকাঝকা করে মুখ্যমন্ত্রী এটা বোঝাতে চাইছেন যে তিনি সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করছেন কিন্তু প্রশাসনের আধিকারিকদের ব্যর্থতায় সাধারণ মানুষ তার সুফল পাচ্ছে না। আর দলীয় নেতৃত্ব কে বকাঝকার মাধ্যমে তৃণমূল নেত্রী দলের নিচুতলা কে বেঁধে রাখতে চাইছেন যাতে টিকিট না পেলে তারা আবার অন্যদিকে (বিশেষ করে বিজেপিতে) চলে না যায়। প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক মহলের মতে, পঞ্চায়েত ভোট পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী এই ধরনের বকাঝকা চালাতেই থাকবেন। কিন্তু প্রশাসনিক আধিকারিকদের একাংশের মতে, মুখ্যমন্ত্রী দলীয় নেতৃত্বকে বকাঝকা করুক আর যাই করুক, টিভি ক্যামেরার সামনে এভাবে প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিকদের ধমক দিলে তা কিন্তু বুমেরাং হতে পারে।
বিভিন্ন বিষয়ে ভিডিয়ো পেতে চ্যানেল হিন্দুস্তানের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
https://www.youtube.com/channelhindustan
https://www.facebook.com/channelhindustan
Channel Hindustan Channel Hindustan is Bengal’s popular online news portal which offers the latest news