চ্যানেল হিন্দুস্তান ব্যুরো
হাতে সময় মোটামুটি এক বছর। লক্ষ্য ত্রিপুরায় রাজনৈতিক ক্ষমতা দখল। দায়িত্ব রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
পশ্চিমবঙ্গ ছাড়া আরও একটি বাঙালি রাজ্য মমতার হাতে তুলে দেবার অ্যাসাইনমেন্ট পেয়ে কিছুটা হলেও আবেগ তাড়িত রাজীব। একই সঙ্গে আত্মবিশ্বাসীও।
আবেগ তাড়িত, কারন দল ছেড়ে বিজেপিতে চলে যাবার স্মৃতি এখনও বাসি হয়নি। ফিরে আসার পর তাঁকেই গুরুদায়িত্ব দিয়েছেন দলনেত্রী। এই কথা মনে করে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে গলা কাঁপছে রাজীবের। বলছেন, “ভুল করেছিলাম। মানুষ মাত্রেই ভুল হয়। আমারো হয়েছিল।” রাজনীতিতে দলত্যাগের ‘ভুল’ প্রথিতযশা অনেক রাজনীতিক কোনো না কোনো সময় করেছেন। কংগ্রেসে এমন উদাহরণ খুঁজতে বেগ পেতে হবে না। পরে তাঁরা আবার ফিরেও গেছিলেন, বড় দায়িত্ব পালন করেছিলেন সাফল্যের সঙ্গে।
রাজীবের রাজনৈতিক জীবনেও কি এমনটাই হল?
বড় রাজনীতিবিদদের সঙ্গে নিজের তুলনা টানতে নারাজ রাজীব। তাঁর কথায়, “ভুল হয়। মানুষ মাত্রই ভুল হয়। ভুল নয়, ভুল সংশোধনটাই বড় কথা।” রাজীবের দাবি, দলের আভ্যন্তরীণ কিছু কারনে অভিমান হয়েছিল, ক্ষোভ হয়েছিল, একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলাম। তবে সেদিনও বলতে দ্বিধা করিনি, আজও করছি না, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই আমার প্রথম ও শেষ রাজনৈতিক অভিভাবক।”
দল ছাড়ার সময় চোখে জল এসেছিল কেন?
প্রশ্ন শুনে এখনো ক্ষনিকের জন্য চুপ করছেন রাজীব। তারপর বলছেন, “সেদিন বারবার মনে হচ্ছিল দিদির মনে কষ্ট দিচ্ছি। আমি আজ যেখানে এসেছি তা একমাত্র ওঁর জন্য। তাই চোখের জল ধরে রাখতে পারিনি।” আবার খানিক্ষণের নীরবতা।
হাতে তো মাত্র এক বছর সময়,কী মনে হচ্ছে? পারবেন?
“এক বছরে অনেক কিছু হয়।” বলছেন রাজীব। তাঁর বক্তব্য, “তৃণমূল ইতিমধ্যেই ওখানে জায়গা করে নিয়েছে। ২৩-২৪ শতাংশ ভোট আছে দলের। তাও তো আপনারা দেখেছেন, কী ভাবে ওখানে ভোট করেছে বিপ্লবের সরকার।”
রাজীবের কথায়, ত্রিপুরার মানুষের কোনো স্বাধীনতা নেই। তাঁরা ভয়ে ভয়ে থাকেন। আতঙ্কগ্রস্ত পরিবেশ। এর মধ্যেই তৃণমূল খাতায় কলমে প্রায় শিকি ভাগ ত্রিপুরাবাসীর সমর্থন পেয়েছে। “বাকিটাও হয়ে যাবে,” বলছেন রাজীব।
তাঁর আরো সংযোজন, “আমাদের সবচেয়ে বড় প্লাস পয়েন্ট, আমাদের নেত্রীর নাম, নেত্রীর ছবি।”
অনেক রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক বা বিশ্লেষকের মত রাজীব ও মনে করেন, একুশের নির্বাচনের পর সাধারণ মানুষের মনে একটি ধারণা বদ্ধমূল হয়েছে যে, মমতাই একমাত্র মোদিকে হারাতে পারেন। আর এটাই তাঁদের সবচেয়ে বড় শক্তি বলে মনে করেন রাজীব।