মধুমন্তী :
“বাড়িতে কন্যা সন্তান জন্মালেই শুরু হয়ে যায় কার আগে কে মেয়েকে বলিদান করবে। এ পর্যন্ত সতীদাহ বন্ধ হলেও ১২-১৫ বছরের বেশীরভাগ মেয়েকেই আমি বিবাহিত দেখেছি। সতীদাহর থেকে এই বাল্যদাহ কম মারাত্মক নয়”-তসলিমা নাসরিনের এই লেখার প্রতিটা অক্ষর যেন আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে বুঝিয়ে দিচ্ছে সমাজে মেয়েদের অবস্থানটা ঠিক কোথায়। শিক্ষালাভের সময় তাঁরা করেছেন মাতৃত্বলাভ।
প্রবহমান গতিতে মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার হয় ‘মাতৃ দিবস’। আর এবারের মাতৃ দিবসে এক অন্যরকম প্রয়াস নিয়েছে ‘ক্রাই’(চাইল্ড রাইটস এন্ড ইউ)। ভারতীয় এই এনজিওটি সম্প্রতি সার্ভে করেছে দেশের বিভিন্ন জায়গার ১০ থেকে ১৫ বছরের মেয়েদের উপর যারা কিনা ইতিমধ্যেই মাতৃত্বের কোঠায় অবস্থান করছেন। ২০১৬ – ২০১৭র এন এফ এইচ এস৪-র সার্ভে রিপোর্ট বলছে ভারতের ৪.৫মিলিয়ন মেয়ে ১৫ থেকে ১৯ বছরের মধ্যে মা হয়েছেন। যার দরুন কিশোরী বয়সে শরীরে বাসা বাঁধছে প্রাণঘাতি সব রোগ। যার মধ্যে রয়েছে অ্যানিমিয়া, অপুষ্টি, হাড় ক্ষয় প্রভৃতি। স্বভাবতই শিক্ষার হার নামছে দিনের দিন। এইসব কারনেও শ্বশুরবাড়িতে অত্যাচারের শিকার হচ্ছেন হাজার হাজার মেয়েরা।
ক্রাই-র ডিরেক্টটার কমল গনত্রা জানান,“বাচ্চা উৎপাদনের কারখানা হিসেবে গন্য করা হয় মেয়েদের। যার ফলে শারীরিক এবং মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছেন এইসব মেয়েরা। সঙ্গে এই সব মায়েদের সন্তানেরা বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই নিরক্ষর তৈরি হচ্ছে”।
সব মিলিয়ে ভীষণ সংকটের মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে আগামী প্রজন্ম। তাই এই পেক্ষাপটে মাতৃত্বদিবস পালন বোধহয় নেহাতি বিলাসিতা।